জীবিকার জন্য পুরোপুরি সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল নদী তীরে বসবাসরত কয়েক হাজার পরিবার। মাছ, কাঁকড়া বা মধু সংগ্রহ করেই চলে সংসার। কিন্তু তিন মাসের নিষেধাজ্ঞায় হঠাৎ করেই সব বন্ধ হয়ে যায়।
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রতি বছরের মতো এবারও জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া, গোলপাতা ও মধু আহরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বন বিভাগ। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে কর্মহীন হয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সুন্দরবন তীরে বসবাসরত কয়েক হাজার বনজীবী পরিবার।
তারা জানান, তিন মাসের বন্ধের জন্য ৫৫ কেজি চাল দেয়া হয়েছে তাদের। তবে এ ৫৫ কেজি চাল পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন তারা। একদিন আয় না করতে পারলে সংসার চলে না। শুধু চাল ছাড়াও পরিবারে আরো অনেক খরচ থাকে, অথচ নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন কর্মহীন হয়ে আছে হাজারো পরিবার।
সুন্দরবনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় শুধু বনজীবীরাই নন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পর্যটন নির্ভর ব্যবসা। সুন্দরবন ঘুরতে আসা পর্যটকরাও এখন যেতে পারছেন না বনে। এছাড়া পর্যটক না থাকায় ঘাটে অলস পড়ে আছে শত শত নৌযান।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। মেরামত না করতে করতে বোটগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কারণ আমাদের টুরিস্ট না আসলে আমরা কিভাবে মেরামত করবো এগুলো। নিষেধাজ্ঞার কারণে জঙ্গলে এখন দুষ্কৃতিকারীরা নানা অপকর্ম শুরু করেছে।’
সরকার প্রতিবছরই সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়, কিন্তু নেই কোনো দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা পরিকল্পনা। নেই বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও। বন বিভাগের দাবি, সিদ্ধান্তটি সুন্দরবনের সুরক্ষার জন্য সরকারি নির্দেশনা মেনেই কার্যকর করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সরকারি নির্দেশ মোতাবেক তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ সময় যাতে কেউ সুন্দরবনে অনুপ্রবেশ না করতে পারে এজন্য আমাদের নিয়মিত টহল চালু রয়েছে। সাথে আমরা স্পেশাল টিম গঠন করেছি এবং এর সাথে আমাদের স্মার্ট টিমেরও টহল কার্যক্রম চালু রয়েছে।’