পাহাড়ি ঢলে পানি বাড়ায় রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

ঝুলন্ত সেতু
ফিচার , ভ্রমণ
এখন জনপদে
2

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ৪ ইঞ্চি তলিয়ে গেছে রাঙামাটির পর্যটনের আইকন ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন। এমন পরিস্থিতিতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সেতু ভ্রমণে আজ (বুধবার, ৩০ জুলাই) সকালে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নোটিশ টানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ক্ষোভ ও হতাশা জানিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। প্রতি বছর সেতু ডুবে যাওয়া রোধে সেতুটি আরও উঁচুতে স্থাপনের দাবি জানিয়েছে দর্শনার্থীরা। এতে দৈনিক ২০-৩০ হাজার টাকা রাজস্ব আয় বঞ্চিত হবে সরকার।

তবে সেতু কর্তৃপক্ষ বলছেন, পানি সরে গেলেই উন্মুক্ত করা হবে পর্যটক চলাচল। এদিকে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এখন প্রতি সেকেন্ড উৎপাদন হচ্ছে ২২২ মেগাওয়াট, যা সঞ্চালন হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

রাঙামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। গেল কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়া ঝুলন্ত সেতু ধীরে ধীরে ডুবতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে সেতুর পাটাতন ৪ ইঞ্চি তলিয়ে গেছে।

পর্যটক আহাদ আহমেদ শাকিল বলেন, প্রতিবছর রাঙামাটিতে ঝুলন্ত সেতু দেখার জন্য সারা দেশ থেকে লাখ লাখ পর্যটক আসেন। কিন্তু বর্ষা আসলে সেতু ডুবে যায়। মানুষ হতাশ হয়ে ফিরে যায়। সেতুটি আরও একটু উপরে তুললে এই সমস্যা থাকতো না।

আবদুল হান্নান বলেন, ৫ বছর পরে দুবাই থেকে এসে রাঙামাটির এই সেতুটা দেখতে আসলাম আজ। এসে দেখি ঝুলন্ত সেতু এখন ডুবন্ত সেতু।

১৯৮৫ সালে দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত সেতুটিতে বছরে প্রায় ৫ লাখের বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন। জনপ্রতি ২০ টাকা প্রবেশ ফি থেকে বাৎসরিক আয়ের অঙ্কে দাঁড়ায় প্রায় ৬০ থেকে ৯০ লাখ টাকা।

কিন্তু কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে ঝুলন্ত সেতুটি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ৩ থেকে ৪ মাস তলিয়ে ডুবে থাকে। কিন্তু এর স্থায়ী সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি এখনো।

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় এরইমধ্যে ঝুলন্ত সেতুর পাটাতন ৪ ইঞ্চি তলিয়ে গেছে। তবে একই স্থানে একটি আধুনিক সেতু নির্মাণে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে রাঙামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এটি হলে এই সমস্যা আর থাকবে না।

তবে এই ক্ষোভ হতাশার মাঝেও আশার কথা শুনিয়েছেন দেশের একমাত্র কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রটির ব্যবস্হাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানিয়েছেন-কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মিন সি লেভেল (এমএসএল)।

দুপুর পর্যন্ত ছিল ১০৫ দশমিক ৫৪ ফুট এমএসএল। পানির উচ্চতা বৃদ্ধিতে ঝুলন্ত সেতু ডুবলেও বিপরীতে এই পানি দিয়েই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এখন প্রতি সেকেন্ড উৎপাদন হচ্ছে ২২২ মেগাওয়াট, যা সঞ্চালন হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

সেজু