কাপ্তাই হ্রদের ঝুলন্ত সেতু ২৪ দিন ধরে ডুবে, পর্যটক চলাচল বন্ধ

পানির নিচে ডুবে আছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
ফিচার , ভ্রমণ
এখন জনপদে
2

বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় ২৪ দিন ধরে তিন ফুট পানির নিচে ডুবে আছে রাঙামাটি পর্যটনের আইকন ঝুলন্ত সেতু। এই পরিস্থিতিতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সেতুতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। সেতু ভ্রমণ বন্ধ থাকায় দৈনিক ২০-৩০ হাজার টাকা রাজস্ব আয় বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তবে সেতু কর্তৃপক্ষ বলছেন, পানি সরে গেলেই উন্মুক্ত করা হবে পর্যটক চলাচল। প্রতি বছর সেতু ডুবে যাওয়া রোধে সেতুটি আরও উঁচুতে স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।

রাঙামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। ১৯৮৫ সালে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন এ ঝুলন্ত সেতুটিতে বছরে প্রায় ৫ লাখের বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন। জনপ্রতি ২০ টাকা প্রবেশ ফি থেকে বাৎসরিক আয়ের অঙ্কে দাঁড়ায় প্রায় ৬০ থেকে ৯০ লাখ টাকা।

কিন্তু কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে ঝুলন্ত সেতুটি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ৩ থেকে ৪ মাস তলিয়ে ডুবে থাকে। কিন্তু এর স্থায়ী সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি এখনো। গেল কয়েক দিনের বর্ষণ আর উজান ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় গেল ৩০ জুলাই সেতু ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেন কর্তৃপক্ষ। এতে গত ২৪ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে সেতু ভ্রমণ। এতে পর্যটকরা ফিরে যাচ্ছেন হতাশ হয়ে।

চট্টগ্রাম থেকে আসা কাস্টম কর্মকর্তা আশু রঞ্জন দাশ বলেন, ‘আসছি বেড়াতে। এসে তো দেখি সেতু ডুবে গেল। আমরা ওখান থেকে জানতে পারিনি সেতু ডুবন্ত অবস্থায় আছে।’

আরও পড়ুন:

ফেনী থেকে আসা সিদ্দিক মজুমদার বলেন, ‘আসলে খুব খারাপ লাগছে। অনেক দূর থেকে আসছি সেতু দেখার জন্য। সেতু ঝুলে থাকবে। এখন দেখছি ডুবে আছে।’

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘গেল ৩০ জুলাই সেতু ডুবে যাওয়ায় পর্যটকদের নিরাপত্তায় সেতুতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে একই স্থানে একটি আধুনিক সেতু নির্মাণে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে রাঙামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এটি হলে এই সমস্যা আর থাকবে না।’

কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মিন সি লেভেল (এমএসএল)। তবে ১০৭ ফুট হলেই ডুবে যায় সেতু।

কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানিয়েছে, আজ সকাল ১০টায় পানির উচ্চতা ছিল ১০৮.২৯০ ফুট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথম দফায় গেল ৪ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট এবং দ্বিতীয় দফায় ২০ আগস্ট থেকে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট বিভিন্ন ধাপে খুলে দিয়ে পানির উচ্চতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সেজু