হাতিয়ায় চোর সন্দেহে বেঁধে মারধরের অভিযোগ: একজনের মৃত্যু, আটক ১

নোয়াখালী
হাতিয়া থানা
এখন জনপদে
অপরাধ
0

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ঠিকাদারের দুই কর্মীকে চোর সন্দেহে বেঁধে রেখে মারধরের পর একজনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট) রাতে জাহাজমারা ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের চর হেয়ার আসাদ নগরে দুলালের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লোকমান হোসেন (৩৫) শেরপুর সদর উপজেলার চকপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।

আজ (শুক্রবার, ২২ আগস্ট) দুপুরে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদরে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে গতকাল রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

এসময় দোকানে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা অবস্থায় মোস্তাফিজুর রহমান (২৮) নামে পিডিবি ঠিকাদারের অপর কর্মীকে উদ্ধার করে পুলিশ। মোস্তাফিজের বাড়ি শেরপুরের শ্রিবরদী উপজেলার পূর্ব জিনিয়া গ্রামে।

এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত স্থানীয় এক যুবককে আটক করে পুলিশ। আটক তারেক আজিজ (৩৫) জাহাজমারা ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের চর হেয়ার গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে। পেশায় ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রী।

আরও পড়ুন:

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম ‌ আজমল হুদা বলেন, ‘নিহত লোকমান হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান ঠিকাদার বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের কাজ শেষ করার পর অপ্রয়োজনীয় ১৬০ কেজি মালামাল বিক্রির জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাহাজমারা ইউনিয়নের আসাদ নগরে ভাঙারি ব্যবসায়ী দুলালের দোকানে যান। এসময় স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ান তারেক আজিজসহ তিনজন মিলে বিক্রি করতে নেয়া মালামালগুলো চুরির বলে তাদের দুজনকে দোকানে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। এক পর্যায়ে তারেক লোহার দণ্ড দিয়ে লোকামানের ডান হাতে ও পিঠে আঘাত করেন। এসময় দুই শতাধিক উৎসুক লোক সেখানে ভিড় করেন। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের দুজনকে উদ্ধার করে। এসময় লোকমান প্রচণ্ড ঘামাতে থাকেন এবং পায়খানা প্রশাব করে দেন। দ্রুত পুলিশ তার বাঁধন খুলে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।’

তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক জাহাজমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দুজন এএসআই ঘটনাস্থলে যান। এরপর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ, হাতিয়া থানার ওসি ও হাতিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রাথমিক তদন্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা অনুযায়ী লোকমানকে মারধরের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার পিঠে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদরে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতে পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আটক অভিযুক্ত তারেক আজিজকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পিডিবি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ঘটনাস্থল থেকে বিক্রি করতে নেওয়া ১৬০ কেজি মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।’

এসএস