প্রতি বছর কোরবানির সময় জমজমাট হয়ে ওঠে চামড়ার বাজার। মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ ট্যানারি মালিকরা যেন অপেক্ষায় থাকে এই দিনটার জন্যই। তবে হতাশা যেন পিছু ছাড়ছে না খুলনার চামড়া ব্যবসায়।
প্রতি বছরের মত এ বছরও দাম-দর নিয়ে টানাটানি লেগেই আছে। সরকারের বেধে দেয়া দামের সাথে মিল নেই কোনো জায়গায়।
এবারের ঈদে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার একটি গরুর কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে ফড়িয়া বা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের। দিনভর বিভিন্ন জায়গা থেকে চামড়া সংগ্রহ করার পর ভাল দাম না পেয়ে ক্ষুব্ধ তারা।
খুলনা নগরীর শেখপাড়া এলাকায় রাস্তার ওপর চামড়ার হাট বসে প্রতি বছর ঈদে। ঈদের দিন সকাল থেকেই ব্যবসায়ীরা লেগে পড়েন চামড়া সংগ্রহের কাজে। রাস্তার উপরেই চলে দরদাম, বেচা-বিক্রি, বাছাই বা প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ।
বিভাগীয় শহরে একটি চামড়ার গুদাম বা নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এ বছর কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও।
বিভিন্ন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বা ফড়িয়ার কাছ থেকে বেশি দামে চামড়া কিনলেও তা ভাল দামে বিক্রি করতে পারছেন না ট্যানারিতে। এ ছাড়া চামড়ার মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।
ত্যাগের মহিমায় কোরবানি, তাই কোরবানির পশুর মাংস থেকে চামড়া সবকিছুরই একটি অংশ যায় দানের খাতায়। এ বছর নগরীর বেশিরভাগ কোরবানির পশুর চামড়া দান করা হয়েছে বিভিন্ন মাদ্রাসায়। এসব চামড়া বিক্রি করা টাকা দিয়ে ভরন-পোষণ চলে মাদ্রাসা পড়ুয়া দরিদ্র শিক্ষার্থীদের। তবে এবার চামড়ার দাম নিয়ে অনেকটা হতাশ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার চামড়া সংরক্ষণের জন্য মাদ্রাসা গুলোতে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১০০ টন লবণ। ঈদের বিকালে বিভিন্ন মাদ্রাসায় চামড়ার অবস্থা জানতে পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক, কথা বলেন কর্তৃপক্ষের সাথে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এ বছর দাম প্রত্যাশিত না হলেও খুলনায় সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি হচ্ছে চামড়া। সিন্ডিকেট ভেঙে চামড়ার দরপতন কিছুটা হলেও এ বছর ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।’
প্রতিবছর খুলনার শেখপাড়া এলাকায় প্রায় ১০ হাজার চামড়া সংগ্রহ করেন ব্যবসায়ীরা। তবে এ সংখ্যা এবার অনেকটাই কমেছে। এদিকে ট্যানারি মালিকদের সাথে সমন্বয় করে দাম ঘোষণার দাবি সব পক্ষের।