চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহারাজপুরের আম চাষি মজিবুর রহমান। দুই বিঘা জমির ৩০টি আম গাছে পেয়েছিলেন প্রায় ২০০ মণ আম। কিন্তু মাছি পোকার আক্রমণে যার অর্ধেকের বেশি নষ্ট হয়েছে।
মজিবুর রহমান বলেন, ‘একটা বাগানে আম থাকে প্রায় ১০০ মণের মতো। সেখান থেকে ৪০ মণের মতো আম বের করতে হয় মাছি পোকায় খাওয়া। পোকায় খাওয়ার ফলে এ আমগুলো পরবর্তীতে ফেটে যায়, নষ্ট হয়ে যায় এসব বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।’
মজিবুর রহমানের মতো একই অবস্থা জেলার অন্যান্য আম চাষিদের। নষ্ট হওয়া আম কেউ গরুকে খাওয়াচ্ছেন, অনেকে আবার সেগুলো বাগানেই ফেলে রেখেছেন। এদিকে বাজারে ফজলি আম বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ। এই দামে উৎপাদন খরচ উঠছে না বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
আম চাষিরা বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি আম পারা সম্ভব তত ভালো থাকবে। দেরি করলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। স্প্রে করার পরেও আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে আমের খরচ উঠছে না। বরং লোকসান হচ্ছে।’
তারা জানান, জেলায় বিভিন্ন বাগানে পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়েছে ৩০ শতাংশের বেশি আম। যার বাজারমূল্য শত কোটি টাকার বেশি। পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে ফুড ব্যাগিংয়ের পরামর্শ কৃষি বিভাগের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব বলেন, ‘মাছি পোকার আক্রমণে যদি আম পচে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তো দাম পাওয়া যায় না। আর এখন ফজলি আমের যে দুরবস্থা, কেউ ফজলি আম কিনতে চায় না।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ইয়াছিন আলী বলেন, ‘বিগত কয়েকদিনের তুলনায় বাজারে আমের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমি মনে করি এ বাজারমূল্যটা আরেকটু বৃদ্ধি পাওয়া দরকার। যাতে কৃষক লাভবান হতে পারে। কারণ উৎপাদন খরচ পুষিয়ে কৃষক যদি লাভবান হতে না পারে তাহলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। চলতি মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার টন।