এফসিএল কন্টেইনার ডেলিভারিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নতুন সিদ্ধান্ত

চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বন্দর
এখন জনপদে , আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

পোশাক শিল্প ছাড়া সব এফসিএল কন্টেইনার দু'মাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে বেসরকারি কন্টেইনার ডিপো থেকে ডেলিভারি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঈদের ছুটি শেষে কার্যকর হবে এই সিদ্ধান্ত। ডিপো সংশ্লিষ্টরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও ব্যবসায়ীরা আইসিডিগুলোর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অতিরিক্ত চার্জ ছাড়াও যন্ত্রপাতি ও শ্রমিক স্বল্পতার অভিযোগ তুলে এতে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে দাবি করেন তারা।

দীর্ঘদিন ধরে সব আমদানি পণ্য বেসরকারি কনটেইনার ডিপো থেকে ডেলিভারি দেয়ার দাবি ছিল ডিপোগুলোর। সম্প্রতি যুক্ত হওয়া ১২টিসহ এখন ৫০ ধরনের পণ্য বেসরকারি ডিপো থেকে ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে, যা মোট আমদানি পণ্যবাহী এফসিএল কনটেইনারের ২০ শতাংশ।

বাকি ৮০ শতাংশের মধ্যে ৫৭ শতাংশ এফসিএল কনটেইনার বন্দরের ইয়ার্ডে খুলে ডেলিভারি দেয়া হয়। ২০ শতাংশ সরাসরি চলে যায় শিল্প মালিকের কারখানায়। তিন থকে চার শতাংশ যায় রেলপথে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, বিশ্বের কোথাও বন্দর চত্বরে কনটেইনার খুলে পণ্য ডেলিভারি দেয়ার নজির নেই। এতে বন্দরে কনটেইনার জট তৈরি হয়, স্বাভাবিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই বন্দর কার্যক্রমের গতিশীলতা বাড়াতে পোশাক শিল্প ছাড়া বাকি সব এফসিএল কনটেইনার বেসরকারি কনটেইনার ডিপো থেকে ডেলিভারি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঈদের ছুটি শেষে দুই মাসের জন্য পরীক্ষামূলক এই কার্যক্রম চালু থাকবে। এই সময়ে যেসব অসুবিধা ও সমস্যা হবে সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে পুরোদমে চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার ও মেরিন সদস্য ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা কন্টেইনারগুলো ঈদের পর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে দুই মাস অফ-ডকগুলোতে পাঠানো শুরু করবো। এ দুই মাস আমরা সুবিধা-অসুবিধাগুলো দেখবো, এটা পুরোপুরি একটা পাইলট প্রোজেক্ট এবং এটার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলো নেব।’

যদিও এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে ব্যবহারকারীরা বলছেন, রপ্তানি কনটেইনারেরই চাপ সামলাতে পারছে না আইসিডিগুলো। এর সঙ্গে আমদানি পণ্যের সব এফসিএল কনটেইনার বেসরকারি ডিপোতে পাঠালে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা।

চট্টগ্রাম কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, ‘ডিপো এবং পোর্টের এক্সপেন্সের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এটাতে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হবে।’

আমদানিকারক শওকত আলী বলেন, ‘এক্সপোর্টের কন্টেইনার অব-ডক হজম করতে পারছে না, ইম্পোর্টেরগুলো কোথায় রাখবে? ঈদের দিনেও আমাদের সেগুলোর জন্য গার্ড দিতে হবে যেন মালামাল চুরি না হয়।’

সক্ষমতা আছে দাবি করে ডিপো মালিকদের সংগঠন-বিকডা বলছে, আমদানিকারকদের সুবিধায় সাময়িক সময়ের জন্য ডুয়েল ডেলিভারি ব্যবস্থা চালু করতে পারে বন্দর। এক্ষেত্রে যার যেখানে সুবিধা, সেখান থেকে ডেলিভারি নেবে।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোটস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বলেন, ‘প্রয়োজনে সব ধরণের এফসিএল কন্টেইনার বেসরকারি অফ ডক থেকে ডেলিভারি দিয়ে ডুয়েল ডেলিভারি পদ্ধতিটা রাখা যেতে পারে সাময়িকভাবে। যাতে আমদানিকারকরা অফ-ডক থেকেও তাদের পণ্য ডেলিভারি নিতে পারে।

প্রতি মাসে গড়ে ২৫ হাজার আমদানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে আইসিডিগুলো।

এসএইচ