বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনার প্রথম দিনের বৈঠক শেষ

ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের তৃতীয় দফার প্রথম দিনের আলোচনা
চুক্তি
অর্থনীতি
0

বাংলাদেশি পণ্যে আরোপ করা পাল্টা শুল্কের হার কমানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে বাংলাদেশ দলের তৃতীয় দফার প্রথম দিনের আলোচনা শেষ হয়েছে। তিন দিনব্যাপী এ আলোচনা ৩১ জুলাই শেষ হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগের দুই দফা বৈঠকে যেসব বিষয় অমীমাংসিত ছিল, সেগুলোতে একমত হয়েছে উভয় দেশ। কোন দেশকে যুক্তরাষ্ট্র কী সুবিধা দিয়েছে, আলোচনায় তা উত্থাপন করেছে বাংলাদেশ। তবে চূড়ান্ত ফয়সালা শেষ দিনই হবে।

এ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রেরিত এক চিঠিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি নিরসনে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আগামী ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। এ সতর্কতা বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের জন্য বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক ও বাণিজ্য ইস্যু নিয়ে তৃতীয় দফার আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে সোমবার (২৮ জুলাই) স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় ওয়াশিংটন ডিসিতে। এর আগে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে লাঞ্চ সেশনের সময় দুই দেশের প্রতিনিধিরা অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় অংশ নেন। প্রথম দিনের এই আলোচনা চলে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এবং তা গঠনমূলক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দুই পক্ষের সূত্রে জানা গেছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এবং অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার অন্যান্য কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রেন্ডন লিঞ্চ, যিনি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর), কাস্টমস, ও অন্যান্য সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

বৈঠকে কেবল শুল্ক বা রপ্তানি সমস্যা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা, বাজার প্রবেশাধিকার, এবং দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ আলোচনার পূর্ণ সমন্বয় করছে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাস। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার ও সরকারের সিনিয়র সচিব গোলাম মোর্তজা জানান, এই সংলাপ দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়াতে সাহায্য করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। এর আগে গত ৯ থেকে ১১ জুলাই দ্বিতীয় দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট (এনডিএ) থাকার কারণে তখনকার আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। এবারের তৃতীয় দফা আলোচনায় পারস্পরিক আগ্রহ ও রাজনৈতিক চাপ দু’টিই বিদ্যমান।

আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হলে তা বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বস্তির বার্তা হতে পারে।

ইএ