কাপ্তাই হ্রদ থেকে রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আয়

আজ রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে মাছ শিকার

কাপ্তাই হ্রদ থেকে আহরিত মাছ
এখন জনপদে , পরিষেবা
অর্থনীতি
0

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের মাছ আহরণ থেকে চলতি মৌসুমে শুল্কবাবদ রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়েছে। এই মৌসুমে ১ সেপ্টেম্বর থেকে গেল আট মাসে শুল্কবাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি। যা গেল অর্থবছরের চেয়ে তিন কোটি টাকার বেশি।

এদিক প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ায় আজ (বুধবার, ৩০ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে তিনমাসের জন্য কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এই নিষেধাজ্ঞা। এই সময় থেকে কাপ্তাই হ্রদের মাছ পরিবহন ও বাজারজাতকরণও নিষিদ্ধ থাকবে। আগামী ১২ এপ্রিল থেকে হ্রদে ৫৬ মেট্রিকটন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে।

হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের সুষ্ঠু প্রাকৃতিক প্রজনন ও বিকাশের স্বার্থে গেল ১৬ এপ্রিল কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

সাধারণত প্রজনন মৌসুমে প্রতিবছর ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত মাছ শিকার বন্ধ থাকে। হ্রদে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞাকালীন মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ২৭ হাজার জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়ে থাকে।

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের হাত ধরে ১৯৬০ সালে এ হ্রদের সৃষ্টি হলেও এখন মিঠা পানিতে মৎস্য উৎপাদন ও সরকারের রাজস্ব আদায়ে ভূমিকা রাখছে। ৭২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের কাপ্তাই হ্রদে বছরে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন মাছের উৎপাদন হয়ে থাকে। যার বাজার মূল্য প্রায় চার হাজার কোটি টাকা।

তবে বাণিজ্যিক যাত্রায় এই মাছের কেবল অর্ধেক থেকেই রাজস্ব পায় সরকার। বাকিটা ব্যয় হয় স্থানীয় চাহিদা পূরণে। যেখানে ২০১৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত গেল পাঁচ অর্থবছরে ৩৫ হাজার সাত মেট্রিক টন মাছ থেকে শুল্ক আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, হ্রদে রুই, কাতল, মৃগেল, আইড়, বোয়ালসহ ৩০ থেকে ৩৫ প্রজাতির মাছই ধরা পড়লেও এর ৯০ থেকে ৯৫ ভাগই চাপিলা আর কেচকি। মিঠাপানির মাছ এবং সুস্বাদু হওয়ায় ভোক্তা পর্যায়ে এই মাছের চাহিদাও বেশি।

কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের মার্কেটিং অফিসার আইয়ুব আফনান জানিয়েছেন, কাপ্তাই হ্রদে মাছের শুল্কবাবদ রাজস্ব আদায়ে এটি রেকর্ড। এই মৌসুমে ১ সেপ্টেম্বর থেকে গেল আট মাসে আট হাজার ৯০০ মেট্রিক টন মাছ থেকে শুল্কবাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি। যেখানে গত অর্থবছরে সাড়ে সাত হাজার মেট্রিক টন মাছ থেকে শুল্কবাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। এবার তার চেয়ে তিন কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আয় এসেছে। এই মৌসুমে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সাড়ে ১৬ কোটি টাকা।

তিনি আরও জানান, প্রজনন মৌসুমের এই সময়ে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আগামী ১২ মে থেকে হ্রদে ৫৬ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে।

এসএস