টানা ৩১৩ দিন পর এক জন ও ৬৮৬ দিন পর একদিনে কোভিডে দুজনের মৃত্যুতে কিছুটা হতচকিত দেশের মানুষ। মূলত টিকা নেয়ার প্রবণতা বাড়ার সাথে সাথেই কমে এসেছিল কোভিডে মৃত্যুর হার।
বছর পেরিয়ে নতুন করে সংক্রমণ ও মৃত্যুর পর আলোচনায় এসেছে মজুত টিকা ও তা গ্রহণে মানুষের আগ্রহের বাস্তবতা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এখন তাদের হাতে ৩১ লাখ টিকা মজুত আছে। যার মধ্যে ১৪ লাখ অধিদপ্তরে এবং প্রায় ১৭ লাখ সারাদেশের সিভিল সার্জন অফিসে সংরক্ষিত আছে। তবে হতাশার খবর হলো ১৭ লাখ টিকার মেয়াদ শেষ হবে আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে। বাকি ১৪ লাখেরও মেয়াদ শেষ হবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. মো. হালিমুর রশিদ বলেন, ‘২০২৪-২৫ সালের জন্য যে ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট টিকা, সেটা দিতে। কিন্তু সেই টিকা যুক্তরাষ্ট্রে এবছরই আসলো। অন্য কোনো দেশে আসছে বলে আমার জানা নেই। সেটা তো আমার দেশে আসতে সময় লাগবে। যদি নতুন টিকা না থাকে তাহলে পুরোনো টিকা দেয়া যাবে। সেই টিকাটা রোগের যে সিভিয়ার হয়ে যায়, সে মাত্রাটা কমিয়ে আনবে।’
কোভিডের নতুন সাব ভ্যারিয়ান্টের বিপক্ষে মজুত থাকা টিকা শতভাগ কার্যকরী না হলেও এটি অনেকটা সুরক্ষা দেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে গর্ভবতী, বয়স্ক, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ও এক বছরের আগে টিকা নেয়া মানুষকে টিকা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর।
তিনি বলেন, ‘পুরাতনদের মধ্যে যাদেরকে দেয়া জরুরি তাদের মধ্যে হচ্ছে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ছয় মাস পরে আরও একটা ডোজ দেয়া উচিত। আর যারা যুবক কিন্তু আগে ভ্যাক্সিন নিয়েছে, যারা কোভিড রোগী নিয়ে সরাসরি কাজ করেন, এবং গর্ভবতীদের প্রতিবার এই ডোজ নিতে হবে।’
এখন গ্রহণ না করলেও কোভিড পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে টিকার চাহিদা বাড়বে। সেই বাস্তবতায় নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে কার্যকরী টিকা আনতে এখনই পদক্ষেপ নেবার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘সংক্রমণ যদি বাড়তেই থাকে তাহলে তো আনতে হবে। আর সংক্রমণ যদি এখনই কমে যায় তাহলে হয়তো আমাদের অল্প টিকা আনলেই চলবে। কিন্তু টিকা তো আনতেই হবে, টিকাবিহীন অবস্থায় থাকা যাবে না। যদি এটার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই টিকা মজুদ রাখতে হবে আমাদের। টিকা নিলেও কিন্তু সংক্রমণটা হতে পারে, কিন্তু সংক্রমণ হলেও কিন্তু গুরুতর অবস্থা হবে না।’
উপসর্গ প্রকাশ পেলেই পরীক্ষা আর ষাটোর্ধ্ব বয়স্কদের হাতে থাকা টিকা নিকটতম কেন্দ্র থেকে জরুরি ভিত্তিতে নেওয়ার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের। কারণ ছয় মাস পর থেকেই কোভিডের বিরুদ্ধে সুরক্ষা কমতে থাকে টিকার।