গরমে রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম।
টানা এই তাপপ্রবাহে বাড়ছে জ্বর, ডায়রিয়াসহ নানা রোগ। চিকিৎসকেরা বলছেন, তীব্র গরমে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বয়স্করা। এ ছাড়াও নানা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যের দিকে দিতে হবে বাড়তি নজর।
হিট স্ট্রোকের মূল কারণ পানিশূন্যতা। মাথা ব্যথা ও ঘোরাসহ চোখে ঝাপসা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়াও অস্বাভাবিক দুর্বলতা, মাংসে টান ও বমি অনুভব হয়। শেষ পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়াসহ খিঁচুনি হতে পারে, বলছেন চিকিৎসকরা।
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতাল পরিচালক কর্নেল তানভীর আহমেদ বলেন, ‘রোগীর হিট ক্যাম্প হতে পারে, অ্যাবডোমিনালে কন্ট্রাকশন হতে পারে, রোগী আনকনশাস হয়ে যেতে পারে। এটা কিন্তু খুবই সিরিয়াস কেইস, রোগী মারাও যেতে পারে।’
তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড মহাখালী হাসপাতালে চালু করা হয়েছে হিট স্ট্রোক সেন্টার। ২৫ শয্যাবিশিষ্ট এই হিট স্ট্রোক সেন্টারে তাপজনিত অসুস্থতায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হবে বিনামূল্যে।
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালের ট্রায়াজ এম. ও ডা. মো. শাকুর আহম্মেদ বলেন, ‘প্রাইমারি ম্যানেজমেন্টটা কিন্তু যেকোনো মানুষকে দিয়ে দেওয়ানো সম্ভব, কাপড় ঢিলা করে দিতে হবে। ঠাণ্ডা পানিয় খাইয়ে দেয়া, গা ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দেয়া, বাতাস দেয়া এগুলোর মাধ্যমে তার খারাপ অবস্থা হওয়ার থেকে প্রাথমিকভাবে রক্ষা করে হাসপাতালে নেয়া যেতে পারে।’
মহাখালীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালের পরিচালক জানান, তাপপ্রবাহ চলাকালে তাপজনিত অসুস্থতায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি হলে প্রয়োজনে শয্যাসংখ্যা বাড়ানো যাবে। গুরুতর রোগীদের জন্যে দ্বিতীয় তলায় রাখা হয়েছে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র।
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতাল পরিচালক কর্নেল তানভীর আহমেদ বলেন, ‘যখন কোনো রোগী আসে, তার যদি হিট রিলেটেড কোনো সমস্যা হয়ে থাকে আমরা প্রথমেই তাকে হিট স্ট্রোক সেন্টারে রেফার করি। ওইখানে ম্যানেজ না হলে আমরা রোগীকে আইসিওতে শিফ্ট করতে পারি। ডিএনসিসির আন্ডারে ৫টি অ্যাম্ব্যুলেন্স ডেডিকেটেড রয়েছে। তাদেরকে কল করা হলে রেস্পন্স করে থাকে।’
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ডিএনসিসির এই জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ সেবাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়াও তীব্র গরমে পার্ক, জলাধার ও মসজিদ গুলোতে দিনের বেলা নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অজুখানা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখার দাবি নগরবাসীর।