১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। নিকষকৃষ্ণ ভোর। একদল বিপথগামীদের অস্ত্রের মুখে জাতি হারায় তার স্বপ্নদ্রষ্টাকে। সেদিন ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধুসহ প্রাণ হারায় তার পরিবারের ১৮ জন সদস্য। এই নারকীয় হত্যার বিচার রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধ করতে, সেবছর ২৬ সেপ্টেম্বর খন্দকার মোশতাক সরকার জারি করে ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তি অধ্যাদেশ। পরবর্তীতে পঞ্চম সংশোধনীর সংযুক্তি হিসেবে সংসদে পাশ হয় ১৯৭৯ তে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, 'এটি ছিল একদিকে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের জন্য একটি সুরক্ষা আইন। অন্যদিকে এটি ছিল মানবতা বিরোধী অপরাধ। এর মাধ্যমে দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকারকে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংসদে বাতিল করা হয় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ। এতে সহজ হয়ে যায় বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের পথ।'
১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল হওয়ার পর হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগও এ আদেশ বাতিলের আইনকে বৈধ বলে রায় দেয়। এর মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান হয় বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদ ও আইনজীবীরা। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, ১৯৭৫ এর আইনটি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে করা হয়নি।
আইনজীবিদের মতে, এ আইন শুরু থেকেই ছিল অবৈধ। যার কারণে দেরি হলেও আটকানো যায়নি হত্যাকারীদের বিচারকাজ। এই আইনের বাতিল বিরোধীরা তখনও মেনে নিতে পারেনি, আজও পারছে না, বলে মনে করেন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। ২০১০ এর ২৮ জানুয়ারি পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মাধ্যমে এ দায়মুক্তি অধ্যাদেশ বাতিলের সফলতা দৃশ্যমান হয়।