রাশিয়ার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমা

রাশিয়ার শক্তিশালী পরমাণু বোমা
বিদেশে এখন
0

পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমা, যেকোনো সংঘাতে এই বোমার মাত্র কয়েকটির বিস্ফোরণ মুহূর্তে পৃথিবীকে করতে পারে জীববৈচিত্র্যের জন্য অযোগ্য। ভারত, পাকিস্তান কিংবা যুক্তরাষ্ট্র নয়, সেই বোমা রয়েছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন রাশিয়ার কাছে। হিরোসীমায় ফেলা লিটল বয়ের তুলনায় যেই বোমা তিন হাজার গুণ শক্তিশালী।

১৯৪৫ সালের আগস্টে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন প্রথমবারের মতো পৃথিবীর কোথাও পরমাণু বোমা হামলা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পরমাণু বোমা লিটল বয় ফেলা হয় জাপানের হিরোসীমায়। এরপর ফ্যাট ম্যান ফেলা হয় নাগাসাকিতে। লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানিতে সেসময় আত্মসমর্পণে বাধ্য হয় জাপান।

হিরোসীমায় ফেলা লিটল বয়ে ছিল ১৫ কিলোটন বিস্ফোরক, অন্যদিকে নাগাসাকিতে ফেলা ফ্যাট ম্যানে ছিল ২৫ কিলোটনের বিস্ফোরক। ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত যখন আলোচনার তুঙ্গে, এমন সময় পরমাণু বোমা নিয়ে আলোচনায় এসেছে আরেক বিস্ফোরক তথ্য। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমা রয়েছে রাশিয়ার দখলে।

১৯৬১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন তৈরি করে এই বোমা। এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমা এটি। যেখানে রয়েছে ৫০ মেগাটনের বিস্ফোরক টিএনটি। হিরোসীমায় ফেলা পরমাণু বোমার তুলনায় ৩ হাজার গুণ শক্তিশালী এই জার বোম্বা।

এই বোমা বানানো হয়েছে ১০০ মেগাটন বিস্ফোরক ধারণসক্ষমতা নিয়ে। কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কমানো হয়েছে ধারণক্ষমতা। এরপরও এই বোমার বিস্ফোরণে আগুনের গোলা ছড়িয়ে যাবে ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত, আগুনের ধোয়ার মাশরুম উঠবে ৬০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত।

যদি বড় কোনো শহরে এই জার বোম্বার ফেলা হয়, ৩৫ কিলোমিটারের মধ্যে সব শেষ করে দেবে। ১০০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত আগুনে পুড়বে সব। শত শত কিলোমিটার দূরের দরজা জানালা ভেঙে পড়বে। মাত্র একটি বোমার বিস্ফোরণে অনেক বেশি তেজস্ক্রিয়তা ছড়াবে।

নেমে আসতে পারে বিপর্যয় নিউক্লিয়ার উইন্টার। পৃথিবীর যে অবস্থা হতে পারে বড় পরিসরে পরমাণু যুদ্ধের পর। বায়ুমণ্ডলে ধুলা আর ধোয়ার ঘন আবরণের কারণে সূর্যের আলো পৌঁছাবে না পৃথিবীতে। তাপমাত্রা কমে শুরু হবে নিউক্লিয়ার উইন্টার।

যদি পৃথিবীজুড়ে কয়েকটি জার বোম্বার বিস্ফোরণ একসঙ্গে হয়, ভয়াবহ বিস্ফোরণে তেজস্ক্রিয়তা মুহূর্তেই ছড়াবে, অগ্নিঝড় শুরু হবে। পরিবেশ বিপর্যয় এতো গুরুতর আর দীর্ঘমেয়াদি হবে যে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে।

এখন পর্যন্ত এতো ধ্বংসাত্মক বোমা পৃথিবীর কোনো যুদ্ধেই ব্যবহৃত হয়নি। তবে ১৯৬১ সালের অক্টোবরে আর্কটিক সার্কেলের কাছে নোভায়া জেমলিয়ার একটি দ্বীপে যুদ্ধবিমানে করে ৪ হাজার মিটার উচ্চতা থেকে ফেলে এই বোমা পরীক্ষা করা হয়। পরমাণু প্রযুক্তির ধ্বংসযজ্ঞের বিষয়ে মনে করিয়ে দেয় শক্তিশালী মারণাস্ত্র এই জার বোম্বা।

সেজু