রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে এখনো কার্যকর কোনো সমাধান আসেনি

ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে পশ্চিমারা
বিদেশে এখন
0

২০২২ সালে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখনো কার্যকর কোনো সমাধান আসেনি। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে কার্যত যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান হয় পুতিনের কাছে। অবশেষে সরাসরি শান্তি আলোচনায় বসতে সম্মত হয় মস্কো ও কিয়েভ। গেল মার্চের পর দ্বিতীয়বারের মতো তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বৈঠকে বসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা।

দ্বিতীয় দফার বৈঠক স্থায়ী হয় মাত্র এক ঘণ্টা। বন্দিবিনিময় এবং ১২ হাজার সেনার মরদেহ হস্তান্তর ছাড়া আলোচনায় আর কোনো অগ্রগতি নেই। মরদেহ সংগ্রহে কয়েকটি স্থানে দুই থেকে তিন দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অসুস্থ ও গুরুতর আহত যুদ্ধবন্দি এবং যাদের বয়স ২৫ এর নিচে কেবল তাদেরই মুক্তি দেয়া হবে।

এদিকে, যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে দুই পক্ষের অবস্থান একেবারে ভিন্ন মেরুতে। ইউক্রেনের শর্তহীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া। স্বল্পমেয়াদি নয় দীর্ঘমেয়াদে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ক্রেমলিন। এছাড়া, রাশিয়ার দাবি-দাওয়ার রূপরেখাও তুলে ধরা হয়েছে বৈঠকে। পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে সরাসরি বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন প্রতিনিধিরা।

রাশিয়ান প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেডিনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছে বিভিন্ন সময়। রাশিয়ার পক্ষ থেকেও বেশকিছু ফ্রন্টলাইনে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। যা বন্দিবিনিময়ের সময় কার্যকর থাকবে। এই বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের সামরিক বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করে ঠিক করবেন।’

ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী নন ভ্লাদিমির পুতিন। বৈঠকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতায় আসতে চায় না মস্কো। শক্তি প্রদর্শন নয়, আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন সমাধান চায় বলে জানান জেলেনস্কি।

ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায় না। তবে শত্রুদের আক্রমণ ঠেকাতে যেকোনো পদক্ষেপ নিতেও পিছু পা হবে না কিয়েভ। ন্যায্যতার ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের বিষয়ে আগ্রহী ইউক্রেন। ইউক্রেনীয়দের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস মিত্র দেশগুলোর ফিরে আসতে শুরু করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

এদিকে, শান্তি আলোচনা চললেও, এক মুহূর্তের জন্য বন্ধ নেই হামলা। সোমবার পূর্ব ইউক্রেনের বিভিন্ন ফ্রন্টলাইনে রুশ বাহিনীর হামলায় হতাহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। অন্যদিকে, ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঝাপোরিঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ। বিদ্যুতবিহীন হয়ে আছে এক লাখ বাসিন্দা এবং দেড় শতাধিক গ্রাম ও শহর।

রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তির পথে আসার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এদিকে, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

বিনিময় ও কয়েক হাজার সেনার মরদেহ হস্তান্তর ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় আর কোনো অগ্রগতি নেই। দ্বিতীয় দফার আলোচনায় জেলেনস্কি ও পুতিনের সরাসরি বৈঠক নিয়েও আলোচনা হয়। তবে, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কিয়েভের অভিযোগ, শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী নন পুতিন। এদিকে, দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রেখেছে। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

সেজু