তুরস্কে দাবানলে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো। তুরস্কের বন অধিদপ্তর বলছে, ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগে কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের। গ্রীষ্মকালের শুষ্ক আবহাওয়া ও তীব্র গরমে দেশটির উপকূলীয় অঞ্চল গ্রাস করছে দাবানল।
তুরস্কের ইজমির শহরের পশ্চিমে অবস্থিত পর্যটন স্পটে ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তিনটি অঞ্চল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এছাড়া, ইজমিরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী প্রধান মহাসড়কটিও বন্ধ হয়ে গেছে। দাবানলের আগুন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে লোকালয়ে। এরইমধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে। ভয়াবহ দাবানলে হুমকির মুখে ভূমধ্যসাগরের জনপ্রিয় পর্যটন অঞ্চলগুলো।
গ্রীষ্মকালের প্রচণ্ড গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় দাবানলের কবলে পড়েছে ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের দেশ গ্রিস। সম্প্রতি দেশটিতে দাবানলের ঘটনা বেড়েছে বহুগুণ। একে একে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে গ্রিসের বিভিন্ন পর্যটন অঞ্চল এবং বনভূমি। ক্রিট দ্বীপের চারটি বসতি থেকে বাসিন্দা ও পর্যটকদের সরিয়ে নেয়ার হয়েছে।
প্রবল বাতাসের কারণে কিছুতেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না দমকল কর্মীরা। হেলিকপ্টার, নৌকা ও ফায়ার ব্রিগেডের প্রায় অর্ধশত গাড়ি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। একদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও, অন্যদিকে আবার জ্বলে উঠেছে দাবানল।
এদিকে, ইউরোপের আরেক দেশ স্পেনে ভয়াবহ দাবানলে দুই জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গেল তিন দিন ধরে দাবানলের আগুনে জ্বলছে কাতালোনিয়া অঞ্চল। পুড়ে গেছে খামারসহ প্রায় ৪০ কিলোমিটার বিস্তৃত কৃষি অঞ্চল। বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। স্পেনের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেও দেশটিতে উচ্চ তাপমাত্রা বজায় থাকবে।
ভয়াবহ এই পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতি ১০ বছর পর পর বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা ২ দশমিক ৮ গুণ করে বাড়ছে। এতে দাবানলসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ছে গোটা বিশ্ব।
ইথ জুরিখের জলবায়ু বিজ্ঞানী এরিক ফিশার বলেন, ‘মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার চরম পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। যার ফলে বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। দাবানলের মতো ঘটনা বার বার এবং আরও তীব্র হচ্ছে। বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা দিয়েছে খরা।’