এদিকে, বুধবারের পর গাজায় যুদ্ধবিরতি বিষয়ক আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানাচ্ছে ইসরাইলি গণমাধ্যম। কাতারের দোহায় চলমান এই আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষেরও।
একদিকে, ত্রাণ শিবিরে খাদ্য সহায়তা নিতে আসা অসহায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা, একমাত্র সচল হাসপাতালে জ্বালানি বন্ধ করে দেয়া, দক্ষিণ ইসরাইল থেকে গাজার সীমান্ত এলাকায় রাতভর বোমা হামলা আর অন্যদিকে, কাতারের দোহায় দফায় দফায় যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে দর কষাকষি। কোন পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে গাজা যুদ্ধ- এ প্রশ্নের উত্তর মিলছে না কোথাও।
গেল বৃহস্পতিবার গাজার দেইর এল-বালাহ অঞ্চলে পুষ্টি সাপ্লিমেন্ট নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো হামলায় ত্রাণ শিবিরে ইসরাইলি হামলা নিয়ে এবার মুখ খুলেছে জাতিসংঘ। তারা বলছে, নারী শিশুর তোয়াক্কা না করে আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ত্রাণকেন্দ্রে দিনের পর দিন হামলা চলছে। পাশাপাশি সংস্থাটির অভিযোগ, হামলা কবলিত অধিকাংশ ত্রাণকেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিল যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল মদদপুষ্ট 'গাজা হিউম্যানেটেরিয়ান ফাউন্ডেশন'।
শুক্রবার এক এক্স বার্তায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের সহায়তা সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি লিখেছেন, ইউএনের মতো সংস্থার চোখের সামনে গাজা শিশু ও ক্ষুধার্ত মানুষ কবরস্থানে পরিণত হয়েছে। এছাড়া, গেল মে থেকে গাজার ত্রাণ শিবিরে ইসরাইলি হামলায় নিহতদের একটি পরিসংখ্যানও হাজির করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘এই সংঘাতের সামগ্রিক দিক বিবেচনায় নিলে আন্তর্জাতিক আইন, হামলার কারণ ও অনুপাতসহ নানা বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক যুদ্ধ আইন মেনে হামলা-অভিযান চালানো হচ্ছে কী না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা প্রয়োজন।’
এমন প্রেক্ষাপটে ইসরাইল বলছে, গাজার ত্রাণ কার্যক্রমে জাতিসংঘ নেতৃত্ব দিক, তারা সেটাই চায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইউএনয়ের পক্ষ থেকে কিছু না জানানো হলেও, বিশ্ব খাদ্য খাদ্য কর্মসূচির ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দাবি, বিতর্কিত মার্কিন সংস্থা 'গাজা হিউম্যানেটেরিয়ান ফাউন্ডেশন' যে এই ত্রাণ সহায়তার অংশীজন হবে তা আগে স্পষ্ট করার প্রয়োজন ছিল।
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় বিশ্বনেতা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো যখন গাজায় অস্ত্রবিরতির দাবি উত্থাপন করে আসছে তখন বিস্ফোরক এক মন্তব্য করেছে ইসরাইলি গণমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরাইল, টিওআই।
যেখানে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলো আভাস দিচ্ছিলো গেল বৃহস্পতিবার কাতারের দোহায় অস্ত্রবিরতি বিষয় আলোচনায় বেশ ইতিবাচক সাড়া মিলছে, সেখান টিওআই বলছে, গেল বুধবার থেকে এখনও পর্যন্ত অস্ত্রবিরতির আলোচনায় উল্লেখ করার মতো কোনো অগ্রগতিই নজরে আসেনি।
এই ন্যারেটিভের সঙ্গে মিলছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বয়ানও। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, যে কোনো সময়ে এই আলোচনা পুরোপুরি ভেস্তে যেতে পারে এমন আশঙ্কা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কয়েকটি সূত্র।
এদিকে, গাজায় চলমান ইসরাইলি অভিযানের প্রতিবাদে আবারও উত্তাল ইয়েমেনের রাজধানী সানা। প্রতি সপ্তাহের মতো গেল শুক্রবারও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করেছেন হাজার হাজার ইয়েমেনি।