ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে মার্কিন হামলার পর প্রশ্ন উঠেছে দেশটিতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএ’র ভূমিকা নিয়ে।
যুদ্ধবিরতির পর তাই জাতিসংঘের এ পর্যবেক্ষক সংস্থাকে সহযোগিতা না করার ঘোষণা দেয় তেহরান। বিষয়টি ইরানের পার্লামেন্টেও পাশ হয়। এরপরই তেহরান ছাড়েন আইএইএ’র কর্মকর্তারা।
তবে ঘুরেফিরে ইরানে আলোচনায় উঠে এসেছে আইএইএ। পার্লামেন্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্বেও জাতিসংঘের এ সংস্থাকে সহযোগিতা করার কথা ভাবছে ইরান।
শনিবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রয়টার্স। যদিও সংস্থাটিকে আবার পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শনের অধিকার দেয়া হবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছে তেহরানের।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, ‘এটা সত্যি যে হামলায় ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এর চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক আইন, আন্তর্জাতিক বিধি-নিষেধ ও পরমাণু কর্মসূচি প্রকল্পের আলোচনা।’
আন্তর্জাতিক এ পর্যবেক্ষক সংস্থাকে আবারও পরমাণু কর্মসূচি পর্যবেক্ষণের সুযোগ দিলে বেশ কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে ইরানকে।
দেশটির পার্লামেন্টের বিধান অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে আবারও নিউক্লিয়ার সাইট পর্যবেক্ষণের লাইসেন্স দিতে হলে ইরানের নিরাপত্তা পর্ষদের সর্বোচ্চ ধাপ সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমতি প্রয়োজন হবে। এছাড়াও এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়বে এমন আশঙ্কা থাকায় এখনও কোনো সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি ইরান।
আব্বাস আরাঘচি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রতি আমাদের সহযোগিতা বন্ধ হয়নি। অবশ্যই পুরোপুরি নতুনভাবে এ কার্যক্রম শুরু করতে হবে।’ এদিকে গেলো মাসের ১৬ জুন ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করেছে তেহরান।
ইরানের পশ্চিমাঞ্চলে একটি ভবনের নিচ তলায় ইসরাইল হামলা করলে আহত হন তিনি। সেসময় পায়ে গুরুতর ব্যথা পান পেজেশকিয়ান। তবে এ খবর ওই সময় না জানিয়ে এর এক মাস পর কেন প্রকাশ করা হলো সে বিষয়ে কিছুই স্পষ্ট করেনি তেহরান।
গেল ১৩ জুন ইরানের ওপর হামলা করে ইসরাইল। পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে ওয়াশিংটন-তেহরানের আলোচনার মধ্যেই এ হামলা করে তারা।
এর জবাবে ইসরাইল ভূ-খণ্ডেও পাল্টা হামলা চালায় তেহরান। দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এর জবাবে কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তড়িঘড়ি করে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইরান ও ইসরাইল।