এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব বাড়ছে ট্রাম্পের। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে বার বার উদ্যোগ নেয়ার পরও রাশিয়ার বাধার কারণে তা সফল করতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এক পর্যায়ে পুতিনের আচরণে হতাশ হয়ে পড়েন ট্রাম্প। শুক্রবারের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে রাশিয়াকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপে ট্রাম্প জানিয়েছেন, প্রথমে পুতিনের সঙ্গে এবং পরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে ত্রি-পক্ষীয় বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে তার। আগামী সপ্তাহেই এই বৈঠক হতে পারে বলেও জানান তিনি। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে আগ্রহ দেখিয়েছেন পুতিনও।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করা সবশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বিঁধেন। ২০২১ সালের জুনে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর প্রায় আট মাস আগে জেনেভায় তাদের মধ্যে বৈঠকটি হয়েছিল। এছাড়া, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে ২০১৯ সালের পর থেকে আর কোনো বৈঠক হয়নি।’
এদিকে রাশিয়াকে শায়েস্তা করতে এরইমধ্যে শুল্ককে হাতিয়ার বানিয়েছেন ট্রাম্প। মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য করা দেশগুলোর ওপরও অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা চাপানো হচ্ছে। যেটিকে দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা বলছে ট্রাম্প প্রশাসন। রাশিয়ার কাছে থেকে জ্বালানি আমদানি করায় ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্কহার ধার্যের পর চীনের ওপরও একই ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।
এদিকে, রাশিয়াকে দেয়া আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার দুই দিন আগে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মস্কো সফরে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুই পক্ষের মধ্যে কার্যকর ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করেছে ওয়াশিংটন ও ক্রেমলিন। ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্পও জানান, পুতিন-উইটকফের বৈঠকে বেশ অগ্রগতি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার বৈঠকের পর ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও যুদ্ধবিরতির আশা দেখছেন। তার মতে, এ বিষয়ে রাশিয়াকে আরও বেশি আগ্রহী মনে হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘এতো আলোচনার মধ্যেও থেমে নেই দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা। রাশিয়ার অভিযোগ, বুধবার ইউক্রেনের প্রাকৃতিক গ্যাস ট্রান্সমিশন সিস্টেমসহ একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় রাশিয়া। অন্যদিকে, ইউক্রেনও মস্কোর সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে।’