চলতি বছর ভিয়েতনামে আঘাত হানা পঞ্চম টাইফুন কাজিকি। দক্ষিণ চীন সাগরে উৎপত্তি হওয়া টাইফুনটি সোমবার উত্তর ও মধ্য ভিয়েতনামের স্থলভাগে আঘাত হানে। এসময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬৬ কিলোমিটার। উপকূলে আঘাত হানার পর টাইফুন কাজিকি আজ (মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট) সকালে লাওসের দিকে অগ্রসর হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়।
ভিয়েতনামের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় টাইফুন কাজিকি। প্রবল বাতাসের সঙ্গে ঝড়ো বৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় উপকূলের বেশকিছু ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। এ সময় সমুদ্রে ৬ ফুট উচ্চতার ঢেউ তৈরি হয়। টাইফুনের আঘাতে হতাহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
ভিয়েতনাম সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, টাইফুনের আঘাতে প্রায় ৭ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ২৮ হাজার ৮০০ হেক্টর ফসলি জমি। উপড়ে গেছে প্রায় ১৮ হাজার গাছ। ৩৩১টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পাঁচটি প্রদেশে দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। এদিকে, টাইফুনের প্রভাবে বন্ধ করে দেয়া ভিয়েতনাম বিমানবন্দরসহ ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন:
সতর্কতা হিসেবে উপকূল থেকে সরিয়ে নেয়া হয় প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দাকে। এদিকে টাইফুন কাজিকি ভিয়েতনামের এনঘে আন প্রদেশের পর্যটন শহর লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। তলিয়ে গেছে শহরের বেশিরভাগ রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি।
এদিকে দক্ষিণ চীনের হাইনান প্রদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে টাইফুনের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। প্রবল বাতাসে গাছ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৬টি সড়ক। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে হাইনান প্রদেশের বড় একটি অংশ। এছাড়া, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহরে মুষলধারে বৃষ্টিতে দেখা দেয় আকস্মিক বন্যা।
হাইনান প্রদেশের জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক লিউ গং বলেন, ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মাছ ধরার জাহাজগুলো তীরে ফিরিয়ে আনা হয়। বন্দরগুলোতে নেয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়া সামুদ্রিক পর্যটন কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়। বিশেষ করে দ্বিপগুলোতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।’
টাইফুন কাজিকির প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়ে উপকূলের জনজীবন। সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয় গণপরিবহন ও দর্শনীয় স্থান। ঝড়ের প্রভাব চলে গেলেও রেখে গেছে ক্ষতচিহ্ন।