গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ইসরাইলে বিক্ষোভ

তেল আবিবের সড়কে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান
বিদেশে এখন
0

নাসের হাসপাতালে হামাসের গোপন ক্যামেরা ধ্বংসে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইসরাইল। সাংবাদিকসহ ২১ জন নিহতের মধ্যে ৬ জন সন্ত্রাসী ছিলো বলে প্রাথমিক তদন্তে উল্লেখ করেছে আইডিএফ। তবে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর তদন্তকে মিথ্যা দাবি করে চ্যালেঞ্জ করেছে হামাস। এমন পরিস্থিতিতে আজ (বুধবার, ২৭ আগস্ট) গাজা ইস্যুতে বড় বৈঠকের সভাপতিত্ব করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে সাড়ে ৩ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেছে ইসরাইলে।

দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ইসরাইলিদের দখলে তেল আবিব। রাজধানীর প্রতিটি সড়ক লোকে লোকারণ্য হবার পেছনে রয়েছে দুটি দাবি, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির জন্য চুক্তি।

জিম্মিদের স্বজনদের আয়োজনে মঙ্গলবারের বিক্ষোভে অংশ নেন সাড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষ। ডে অফ ডিজরাপশন নামের এই বিক্ষোভে টায়ার জ্বালিয়ে আটকে দেয়া হয় জাতীয় মহাসড়ক। মন্ত্রীদের বাসভবনের সামনে চলে পদযাত্রা। আর নিরাপত্তা মন্ত্রীসভার বৈঠকের সময় বিক্ষোভ করা হয় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সামনে। জিম্মিদের স্বজনদের দাবি, জনগণের চাপকে ভয় পাচ্ছেন নেতানিয়াহু।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়াই প্রায় ৭০০ দিন ধরে যুদ্ধ চলছে। আজ বিক্ষোভের কারণে পরিষ্কার হলো নেতানিয়াহু জনগণের চাপকে ভয় পান। প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেয়া দরকার আমরাই তার ভাগ্য নির্ধারণ করবো। তাকে আমাদের কথা শুনতে হবে।’

যদিও বিক্ষোভের কোনো আঁচ পড়েনি উপত্যকায়। মঙ্গলবার দিনভর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। নাসের হাসপাতালে হামলায় সাংবাদিকসহ ২১ ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইডিএফ। যেখানে উল্লেখ করা হয়, হাসপাতালে বসানো হামাসের গোপন ক্যামেরা ধ্বংস করতে হামলা চালায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। নিহতদের মধ্যে ৬ জন হামাস সদস্য ছিলো বলেও দাবি করা হয়। যদিও দাবির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করেছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠনটি।

আরও পড়ুন:

হাসপাতালে হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদের হত্যার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে চলছে নিন্দার ঝড়। ইসরাইলি হামলাকে অগ্রহণযোগ্য বলছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীন। যদিও জার্মানির বিশ্বাস, হামলার সময় সাংবাদিকদের টার্গেট করেনি আইডিএফ।

জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ বলেন, ‘সাংবাদিকদের টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছে, এমন দাবি আমি বিশ্বাস করি না। ইসরাইলি সেনা ও সরকার এই হামলার বিষয়ে তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চূড়ান্ত মন্তব্যের আগে তদন্ত ফলের অপেক্ষা করছি।’

জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার দপ্তরের মুখপাত্র থামেন আল খিতান বলেন, ‘গাজায় সাংবাদিক হত্যা পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু নীরব থাকাই নয়, বরং জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবিও জানানো হচ্ছে। এই ঘটনায় নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে অল্প সময়ের মধ্যে দুইবার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।’

গাজা সিটিতে সামরিক অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে শুধু বাকি রয়েছে নেতানিয়াহুর অনুমোদন। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার হোয়াইট হাউজে গাজা ইস্যুতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সভাপতিত্ব করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। জানান, বছরের শেষ নাগাদ গাজায় যুদ্ধ শেষ করার আশা করছে ওয়াশিংটন।

এদিকে অবরুদ্ধ পশ্চিম তীরের রামাল্লায় অভিযানের সময় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ইসরাইলি সেনারা। আইডিএফের গুলির জবাবে পাথর ছুড়েছে ফিলিস্তিনি তরুণেরা। এসময় অর্ধশতাধিক আহতের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনকে গ্রেপ্তারের তথ্য মিলেছে।

ইএ