একের পর এক মিসাইলের পরীক্ষা চালাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। পূর্ণ শক্তিতে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি। স্থল, নৌ কিংবা আকাশ, সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে দুই দেশের সীমানা।
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় প্রায় প্রতিদিনই বন্দুক যুদ্ধে জড়াচ্ছে দুই দেশের সেনারা। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে কপাল পুড়লো কাশ্মীরবাসীর। কারণ উপত্যকার দুই প্রান্তের জনগণের জীবিকার প্রধান উৎস পর্যটন এখন বন্ধের মুখে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য বলছে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের হাউজ বোট ও হোটেলের স্বত্ত্বাধিকারীরা পর্যটকদের জন্য ছাড় দিচ্ছেন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত। যদিও এতে আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না পর্যটকদের। ৮৭টি ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশনের মধ্যে সরকারের নির্দেশে বন্ধ ৪৮টি। কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানের দাবি, এভাবে চলতে থাকলে ক্ষতির অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে ৫ হাজার কোটি রুপি। তাই পর্যটকদের ভ্রমণ বাতিলে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন উপত্যকাবাসী।
উপত্যকাবাসীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘পর্যটন আমাদের জীবিকার একমাত্র উৎস। তবে পেহেলগামে হামলার পর ব্যবসায় বড় প্রভাব পড়েছে। ৯০ শতাংশ পর্যন্ত আয় কমে গেছে।’
একজন ট্যুরিস্ট গাইড বলেন, ‘আমি এখানে ট্যুরিস্ট গাইড হিসেবে কাজ করি। সবসময় পর্যটকদের নিয়ে আমাকে ব্যস্ত থাকতে হতো। এখন দেখতেই পারছেন কাজের জন্য ঘুরতে হচ্ছে।’
সীমান্তের ওপারে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গেলো বছর ভ্রমণ করেন প্রায় ১৫ লাখ পর্যটক। যা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের তুলনায় অর্ধেক। সংখ্যায় তারতম্য থাকলেও আজাদ কাশ্মীরের পরিস্থিতিও একই রকম। অঞ্চলটির সাড়ে ৫০০টি হোটেল ও গেস্ট হাউজের প্রায় সবগুলোই ফাঁকা।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের কারণে পর্যটকের সংখ্যা কম। তীব্র শীতও আরেকটি কারণ। যদিও মূল কারণ দুই দেশের সংঘাত। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত অবনতি হচ্ছে। পাশেই সীমান্ত থাকায় আশপাশের রাস্তাও বন্ধ রয়েছে। এ কারণে পর্যটকের সংখ্যা কম।
দুই দেশের রাজনীতির বলির পাঠা হতে চান না উপত্যকাবাসী। তাই অস্ত্রের পরিবর্তে কূটনীতির মাধ্যমে সরকারের কাছে দ্বন্দ্ব নিরসনের আহ্বান ভূস্বর্গের বাসিন্দাদের।