মার্কিন হুমকি সত্ত্বেও মস্কো থেকে তেল কিনবে নয়াদিল্লি

জ্বালানি তেলবাহী ওয়াগন
এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে তেল কিনবে ভারত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি ভারতীয় সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বলছে, রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করতে, তেল কোম্পানিগুলোকে কোনো নির্দেশনাই দেয়নি ভারত সরকার। মস্কো থেকে তেল আমদানি করে কোটি কোটি ডলার সাশ্রয় হওয়ায়; যুক্তরাষ্ট্রের হুমকিতে ভারতের মাথানত করা ঠিক হবে না বলে মনে করছেন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা।

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার এক মাস না যেতেই ১৩ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন জয় করার চেষ্টা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধান লক্ষ্য থাকে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লির সম্পর্ক জোরালো করা। বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তির বিষয়েও হয় আলোচনা।

একইসঙ্গে চির প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার সঙ্গেও বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ায় ভারত। যার কারণে ভেতরে ভেতরে নয়াদিল্লির ওপর ক্ষোভ জমা হয় ওয়াশিংটনের। বাণিজ্য অংশীদারদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক শুল্ক আরোপের মধ্য দিয়ে যা পুরোপুরি দৃশ্যপটে আসে। যেখানে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ শুল্ক ভারতের কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

শুধু তাই নয়; রাশিয়ার অস্ত্র ও তেল কেনা অব্যাহত রাখলে ভারতকে অতিরিক্ত জরিমানা ভোগ করতে হবে বলে হুমকিও দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমনকি শুক্রবার দাবিও করেন, রাশিয়া থেকে আর তেল কিনবে না ভারত।

একদিন না যেতেই ট্রাম্পের এই দাবি মিথ্যা প্রমাণ করলো ভারত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি ভারতীয় সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এমন তথ্য তুলে ধরেছে নিউ ইয়র্ক টাইমসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। সূত্রের দেয়া তথ্য বলছে, মার্কিন হুমকি সত্ত্বেও মস্কোর কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখবে নয়াদিল্লি। কারণ তেল চুক্তি অনেক দীর্ঘমেয়াদী; চাইলেই রাতারাতি বন্ধ করা সম্ভব নয়। এমনকি দেশটির বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছে, যেহেতু রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করে কোটি কোটি ডলার সাশ্রয় হচ্ছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকিতে মাথানত করা উচিত হবে না ভারতের।

ভারতের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘আমরা আমাদের তেলের এক তৃতীয়াংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করি। তাই রাশিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী। রাশিয়া থেকে আমদানি করে আমরা কোটি কোটি ডলার সাশ্রয় করছি। তাই আমার মনে হয় সরকার এটি অব্যাহত রাখবেই। আমাদের জাতীয় স্বার্থে যা ভালো তা তাই করতে হবে; সেদিক বিবেচনায় সিদ্ধান্তও নিতে হবে।’

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ও ব্যবহারকারী ভারত সবচেয়ে বেশি; অর্থাৎ ৩৫ শতাংশ তেল আমদানি করে রাশিয়া থেকে। তালিকায় এর পরেই রয়েছে- ইরাক, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

চলতি মাসে ভারতীয় বন্দরে তেল সরবরাহের জন্য রাশিয়ার তিনটি জাহাজ নির্ধারিত ছিল। এ তিনটি জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন। তেল থেকে রাশিয়ার রাজস্ব কমানোর লক্ষ্যে কঠোর অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো। ইউক্রেনের সাথে শান্তি চুক্তিতে সম্মত না হলে রাশিয়ার ওপর ১০০% অতিরিক্ত শুল্কারোপের হুমকিও দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

এএইচ