ন্যাটোর প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে ঐকমত্য, ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিলেন সেক্রেটারি জেনারেল

ন্যাটো সম্মেলনে বিশ্বনেতারা
ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

নতুন নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় ঐতিহাসিক এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। মার্কিন প্রেসিডেন্টের চাপে অবশেষে ২০৩৫ সালের মধ্যে জোটের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যয় জিডিপির পাঁচ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সদস্য দেশগুলো। যার কারণে ট্রাম্প প্রশংসার দাবিদার বলে উল্লেখ করেছেন ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুট। নেদারল্যান্ডসের হেগে আয়োজিত ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে মিত্রদের নিরাপত্তার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

গতকাল (বুধবার, ২৫ জুন) নেদারল্যান্ডসের হেগে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েই মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটটির প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানো নিয়ে সব আনিশ্চয়তা দূর করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

প্রথমে স্পেনের সম্মতি না থাকলেও, ট্রাম্পের চাপে ব্যয় বাড়ানোর বিষয়ে শেষ পর্যন্ত ঐক্যমতে পৌঁছায় সব সদস্য রাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে ২০৩৫ সালের মধ্যে জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় জিডিপির পাঁচ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রথমে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও অবশেষে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হলো।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘যুক্তরাজ্যকে সামনে রেখে, ন্যাটো মিত্ররা একটি নতুন প্রতিরক্ষা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিতে সম্মত হয়েছে। যা ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যয় জিডিপির পাঁচ শতাংশে উন্নীত করবে। যা ন্যাটোকে আগের চেয়ে শক্তিশালী করে তুলবে।’

এ আওতায় জিডিপির পাঁচ শতাংশের মধ্যে প্রতিবছর মূল প্রতিরক্ষা প্রয়োজনীয়তার জন্য জিডিপির কমপক্ষে তিন দশমিক পাঁচ শতাংশ বিনিয়োগ থাকবে। পাশাপাশি অবকাঠামোর সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষা-সংশ্লিষ্ট শিল্প খাতকে শক্তিশালী করতে আরও এক দশমিক পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় করা হবে। এ অবস্থায় ট্রাম্প প্রশংসার দাবিদার বলে উল্লেখ করেছেন ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুট।

আরো পড়ুন:

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট কথা বলেছেন। আমেরিকা ন্যাটোর প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আজ আবারও তা নিশ্চিত করেছেন। একই সাথে তিনি এও স্পষ্ট করেছেন যে, ইউরোপীয় মিত্র এবং কানাডার আরও বেশি অবদান প্রত্যাশা করে আমেরিকা। আমরাও দেখতে পাচ্ছি তারাও এতে সাড়া দিচ্ছেন।’

ন্যাটোর মিত্রদের নিরাপত্তার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। কারণ ন্যাটো মিত্ররা তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যা কেউ সম্ভব বলে ভাবেনি।’

ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মার্ক রুট ও ইইউ নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনকে সমর্থনের বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ‘অবিচল সার্বভৌম অঙ্গীকার’ পুনর্ব্যক্ত করা হলেও দেশটিকে ভবিষ্যতে ন্যাটো সদস্যপদ দেয়ার বিষয়টি এবারের ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়নি। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি অর্জনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আবারও।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মনে হয় এটি শেষ করার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত সময়। আমি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে কথা বলব। জোর দিয়ে দেখবো আমরা এটি শেষ করতে পারি কি-না।’

এদিকে ন্যাটো নেতারা জোটের অনুচ্ছেদ ৫-এর প্রতি নতুন করে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে জানান, জোটের এক দেশের ওপর হামলা মানেই সব দেশের ওপর হামলা। বিশেষ করে এবারের বেশিরভাগ সিদ্ধান্তই রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি হুমকি মোকাবিলায় নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ন্যাটো নেতারা।

এসএস