গত সোমবার (১৮ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, তার দেশ ও মিত্ররা এখন নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বাস্তব রূপরেখা কী হতে পারে তা নিয়ে কাজ করছে।
অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ নামে একটি জোটের, যারা যুদ্ধোত্তর ইউক্রেনে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে প্রস্তুত। এ লক্ষ্যে জোট শরিকদের সঙ্গে আলোচনাও করছেন তিনি। আর ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নির্ধারণে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন ব্রিটিশ সেনাপ্রধান অ্যাডমিরাল স্যার টনি র্যাডাকিন।
তবে এ ‘নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ প্রকৃত অর্থে কী? এমনকি ইউক্রেন ফের রাশিয়ার আক্রমণের মুখে পড়লে, এটি আদৌ কার্যকর থাকবে কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নানা মহলে।
ইউক্রেন চায় ন্যাটোর সদস্যপদ, যা আপাতত হচ্ছে না। কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরইমধ্যে যুদ্ধবন্ধের শর্ত হিসেবে তা নাকচ করে দিয়েছেন। ইউরোপের কিছু দেশও ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার কিছুটা আভাস মিলেছে বিশ্লেষকদের বক্তব্যে। যা হলো-
ইউক্রেনের আকাশসীমা পর্যবেক্ষণ, কৃষ্ণসাগরে নৌ চলাচলের নিরাপত্তা, সেনা প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ, আর ভবিষ্যতে রাশিয়া চুক্তি লঙ্ঘন করলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
আরও পড়ুন:
যদিও ট্রাম্প বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে। তবে তারা সেখানে কোনো মার্কিন সেনা পাঠাবে না। আবার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের অবস্থান পরিবর্তনশীল— ফলে ইউরোপীয় দেশগুলোও আস্থা পাচ্ছে না।
অন্যদিকে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনে তারা ন্যাটোর উপস্থিতি কখনোই মেনে নেবে না। নিরাপত্তা নিশ্চয়তা মস্কোর বিরুদ্ধে গেলে পশ্চিমা শক্তির ওপর চড়াও হতে পারে রাশিয়া— এমন আশঙ্কাও রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে ইউক্রেনকে এমনভাবে নিরাপত্তা দিতে হবে যাতে রাশিয়া পরবর্তীতে যেকোনো হামলা চালাতে ভয় পায়। তবে এক্ষেত্রে আগ্রাসী হওয়া যাবে না। কেননা সেক্ষেত্রে রাশিয়া, ইউক্রেন এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গেও সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।
সবমিলিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট, আর তা হলো ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা এখনও ধোঁয়াশায়। কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং এখনও একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। সামরিক দিক থেকে এটি কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে আগামী দিনের কূটনৈতিক ও কৌশলগত সিদ্ধান্তের ওপর।