অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় কমতে শুরু করেছে মার্কিন ডলারের দর

মার্কিন ডলার
উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

ধস নেমেছে মার্কিন ডলারের বাজারে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে ডলারের দর। যা গেল ৫২ বছরের ইতিহাস সর্বোচ্চ দরপতন। এজন্য ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নীতিকেই দায়ী করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। যার বড় ধরনের প্রভাব পড়তে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে।

সেইফ-হ্যাভেন বা নিরাপদ মুদ্রা নামে খ্যাত মার্কিন ডলারের রেকর্ড দরপতন দেখছে বিশ্ব। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই নাজেহাল দশা ডলারের। যা ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় ধস। গেল ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর মুদ্রা- পাউন্ড, ইউরো ও ইয়েনের তুলনায় ডলারের দর কমেছে দশ দশমিক আট শতাংশ।

ডলারের এমন দরপতনের পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নীতি দায়ী বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। যার মধ্যে রয়েছে ক্ষমতা গ্রহণের শুরুতেই চীন ও কানাডাসহ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের আমদানির ওপর উচ্চহারে সম্পূরক শুল্ক ঘোষণা। এতে মার্কিন অর্থনীতির ওপর আস্থা কমেছে বিনিয়োগকারীদের। ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্যারিফ ঘোষণার পর তিন দিনে বেঞ্চমার্ক এস অ্যান্ড পি ফাইভ হান্ড্রেট মূলধন হারিয়েছে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। একইসঙ্গে মার্কিন ট্রেজারিগুলো তাদের দর কমিয়েছে।

উচ্চ হারে শুল্ক নীতির পাশাপাশি ট্রাম্পের বিগ বিউটিফুল বিলের ফলে ডলারের এমন দৈন্যদশা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে বিপুল অংকের ঋণের বোঝা মাথায় উঠছে যাচ্ছে বলেও আশঙ্কা অনেকের। এই বিলটি আইনে পরিণত হলে কর কমার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক উন্নয়নে ব্যয় কমবে। বিপরীতে বাড়ানো হবে সামরিক খাতের ব্যয়। এতে ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণের বোঝা মাথায় উঠবে যুক্তরাষ্ট্রের। ২০৩৪ সালের মধ্যে ফেডারেল ঋণের পরিমাণও তিন দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ছাড়াবে।

আটলান্টিক কাউন্সিলের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে বিশ্ব জিডিপির এক-চতুর্থাংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবদান থাকলেও, বিশ্ব রপ্তানির ৫৪ শতাংশ ডলারে নির্ধারিত হয়েছিল। এছাড়া ডলারের দর বাড়ায় স্বর্ণ কেনায় বেশি মনোযোগী বিনিয়োগকারীরা। যার বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ডলারের বাজারে।

ডলারের দর এভাবে নামতে থাকলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মত বিশ্লেষকদের। কারণ ডলার দুর্বল হলে জাম্বিয়া, ঘানা বা পাকিস্তানের মতো ঋণগ্রস্ত দেশগুলোর ডলারে-ঋণ পরিশোধের বোঝা কমবে। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, ধাতু ও কৃষিপণ্যের দাম বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে লাভবান হবে রপ্তানিকারক দেশগুলো।

এসএস