চট্টগ্রামে অবৈধ ক্লিনিকের সংখ্যা জানে না প্রশাসন

চট্টগ্রাম
স্বাস্থ্য
দেশে এখন
0

চট্টগ্রামে লাইসেন্স না থাকা ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নির্দিষ্ট তথ্য জানে না স্বাস্থ্য প্রশাসন। অথচ আদালতের নির্দেশের পর এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে মাঠে নামার কথা বলছে কর্তৃপক্ষ।

ফিজিওথেরাপি সেন্টারের নামে বাণিজ্যিক ভবনে ফ্লোর ভাড়া নিয়ে কেবিন করে হাসপাতালের মতো রোগি ভর্তি করা হয়। কেউ ১০ দিন আগে কেউবা ১ মাস এসেছেন। আলাদা কক্ষে আবার পেশাদার চিকিৎসক ছাড়াই প্রেসক্রিপশন বা পরামর্শ দেয়ার মতো কার্যক্রমও চলছে। হাসপাতালের কোন লাইসেন্স না নিয়েই এসব চলমান আছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশনার পরদিন বুধবার নগরের মির্জfপুল এলাকায় দুটি ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অভিযান চালিয়ে এমন অনিয়মই খুঁজে পায় চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসন। এসব বন্ধের নির্দেশ দেয়। যদিও এমন অভিযোগ এসকল প্রতিষ্ঠান মানতে নারাজ।

ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মকর্তারা বলেন, 'আমরা শুধু ফিজিওথেরাপি দেই। এটা কোন হাসপাতাল না। এখানে আমরা সংকটপূর্ণ কোন রোগি রাখি না। যারা দূর-দূরান্ত থেকে আসে কিন্তু থাকার জায়গা নাই। তারা এখানে থাকে।'

চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগি বলেন, 'আমাকে এখানে যিনি রেফার্ড করেছে আমি এখন উনার তত্ত্বাবধানেই আছি।'

গত বছর থেকে বেশ কয়েক দফায় অনিবন্ধিত ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসন। এসময় নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার অভিযোগে অর্ধশত প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়। আবার বেশ কয়েকটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়।

স্বাস্থ্য প্রশাসনের নানা অভিযান আমাদের সাময়িক সস্তির কারণ হয়েছে হয়তো। কিন্তু দিনশেষে চট্টগ্রামবাসীর জন্য নিশ্চিত করতে পারেনি অনিয়ম,গলাকাটা ব্যয় বা ভুল চিকিৎসা থেকে বাঁচার নাগরিক অধিকার। কারণ প্রশাসনের এইসব অনিয়মিত অভিযানে নজরদারির বাইরে থেকে গেছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান।

বছরের পর বছর নানা অভিযোগের পরও দেদারসে চালিয়ে গেছে তাদের কার্যক্রম। এক্ষেত্রে জেলা ও নগরে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা জানা থাকলেও, অনুমোদনহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা নিয়ে নির্দিষ্ট কোন তথ্য দিতে পারছে না খোদ স্বাস্থ্য প্রশাসন।

|undefined

অবৈধ ফিজিওথেরাপি সেন্টারে অভিযান চালাচ্ছে চট্টগাম স্বাস্থ্য প্রশাসন

মন্ত্রীর ঘোষণা ও আদালতের নির্দেশের পর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কাছে লাইসেন্স ছাড়া প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়েছে অধিদপ্তর।

চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন বলেন, 'আমরা খবর পেলেই কিন্তু ছাড় দিবো না। আমরা সবাইকে বলবো সতর্ক হয়ে যান বা লাইসেন্স করে ব্যবসা করেন। আমাদের কোন আপত্তি নাই।'

চিকিৎসক নেতাদের দাবি চট্টগ্রামের আনাচে কানাচে অনেক লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফিজিওথেরাপি সেন্টার ও বিদেশি নামিদামী হাসপাতালের নাম ভাঙ্গিয়েও ব্যবসা করছে অনেক প্রতিষ্ঠান।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান বলেন, 'ফিজিওথেরাপি অনেক সেন্টারে রোগি ভর্তি রাখছেন। তাদের কাছে কোন লাইসেন্স নেই। তারা বিদেশের কোন একটা প্রতিষ্ঠানের নাম করে এখানে চালু করে দিয়েছেন এবং প্রচুর টাকা পয়সা নিচ্ছেন।'

স্বাস্থ্য খাতে সুশাসন ও সেবার মান নিশ্চিতে প্রশাসনিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার পরামর্শ এই চিকিৎসক নেতার। বলেন, 'সিভিল সার্জন অফিসের জনবল বাড়ানোর কোন বিকল্প নাই। শুধু চট্টগ্রাম নয় সারাদেশেই ডেপুটি সিভিল সার্জন পদ বাড়িয়ে ল্যাব-ক্লিনিকের জন্য আলাদা নিয়োগ দিতে হবে।'

মন্ত্রীর ঘোষণার পর সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে। তাদের আশা আগের বারের মতো হুটহাট অভিযানের পর প্রশাসন থমকে যাবেনা।

এএইচ