নীলক্ষেত মোড়, পুরো সড়ক যেন ব্যাটারি রিকশার দখলে। পায়ের ওপর পা তুলে সড়কে রাজত্ব করা চালকরা যেন অদম্য। তাইতো তাদের দ্বারা সৃষ্ট যানজট কমাতে আপ্রাণ চেষ্টা ট্রাফিক পুলিশের।
তবু যেন নিয়ম না মানার বালাই বাংলার 'টেসলা' খ্যাত এই বাহনের। তাইতো হিমশিম খাচ্ছেন ৪ জন পুলিশসহ ট্রাফিক পুলিশের সহায়ক ৫ শিক্ষার্থী।
এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আইন তো মানেই না। হুটহাট চলে আসে। গায়ে এসে লাগিয়ে দেয়।’ আরেক শিক্ষার্থী জানান, একটু আগেই অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। তাদের হাসপাতালে দিয়ে এসেছি।
এখনও সুনির্দিষ্ট আইনি কাঠামোর আওতায় না থাকায় প্রধান সড়কে ব্যাটারি রিকশার বেপরোয়া বিচরণ নিয়মিত দৃশ্য। আর চালকদের মধ্যে নিয়ম না মানার প্রবণতা বেশি। দ্রুতগতির জন্য বাধ্য হয়েই চড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। অন্যদিকে জনপ্রিয়তা কমেছে পায়েচালিত রিকশার।
নগরীর এক বাসিন্দা বলেন, ‘এরা অনেক গতিতে রিকশা চালায়। মূলত তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে।’ পায়েচালিত রিকশা চালকরাও জানান অভিযোগ। একজন বলেন, ‘ওরা ৫০ টাকা ভাড়ার রাস্তা ৩০ টাকাতেও যায়।’
অটোচালকদের একজন জানান, এগুলো বন্ধ করে দিলে কীভাবে হবে। পার্টস, ব্যাটারি আনা বন্ধ করে দেন এমনিই বন্ধ হয়ে যাবে।
দেখে কে বলবে এটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের মূল ফটক! অ্যাম্বুলেন্সে রোগী প্রবেশের পথ টুকুও বন্ধ করে দিয়েছে এসব অটোরিকশা। রোগ সারাতে এসে এখান দিয়ে প্রবেশের সময়ও ঘটছে দুর্ঘটনা,আহত হচ্ছেন রোগীরা!
এদিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে অটোরিকশার যন্ত্রাংশ আমদানি, অটোরিকশা উৎপাদন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবিসহ মূল সড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ঘোষণার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সড়কে ঘাতক হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে সংগঠনটির নেতারা বলেন, অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্য অটোরিকশা দায়ী। শুধু দুর্ঘটনা নয়, সড়কে যানজটেরও বড় কারণ এসব যান। অতি দ্রুত অটোরিকশা বন্ধ করা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আইনি পদক্ষেপ না নিলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই আমরা এই অটোরিকশাচালকদের বিরুদ্ধে দুর্বারভাবে আন্দোলন গড়ে তুলবো।’
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি আবদুল্লাহ মেহেদী দীপ্ত বলেন, ‘আগামী সাতদিনের মধ্যে অটোরিকশার যন্ত্রাংশ আমদানি, অটোরিকশা উৎপাদন ও বিক্রয় সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।’
সাতদিনের মধ্যে সুরাহা না হলে শিক্ষার্থীরা অটোরিকশা বন্ধে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।