১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন আর ’৭১ এর মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম দেশের ইতিহাসে অনন্য অধ্যায়। যার স্মরণে তৈরি হয়েছে শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ।
ইতিহাসের এই অধ্যায়ে যুক্ত হয়েছে সবশেষ ২০২৪ এর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে সৃষ্টি হওয়া জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থান। জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ স্মরণে এই ভূখণ্ডে প্রতিরোধ ও লড়াইয়ের ইতিহাস চিত্র ও খোদাইয়ের মাধ্যমে তেমনই একটি গণমিনার তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ‘গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি’।
আজ (বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে এই উদ্যোগের ঘোষণা দেন আয়োজকরা। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম জানান, গণমিনার বাস্তবায়নে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকা, যা আসবে গণচাঁদা থেকে। আগামী রোববার (২২ জুন) থেকে শুরু হবে অর্থ সংগ্রহ।
মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘একটা নাগরিক উদ্যোগকে সিটি করপোরেশন নানা ধরনের ভূমি, অর্থ এবং ব্যবস্থাপনা, প্রকৌশল দিয়ে সাহায্য করছে। সেটা এক ধরনের পরোক্ষ রাষ্ট্রীয় সহায়তা। প্রসেস অলরেডি শুরু হয়ে গেছে। আমরা একটা ভিজিবল রূপায়ণ দেখতে চাই ৫ আগস্ট। কিন্তু সেটা শেষ নয়, এটা চলতে থাকবে।’
পুরাতন বিমানবন্দরের পাশের লিংক রোড এবং বিজয় সরণির মধ্যবর্তী সবুজ চত্বরে এই গণমিনার নির্মাণের পরিকল্পনা তুলে ধরেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্থপতি কামার আহমদ সাইমন। জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জাতিসংঘ স্বীকৃত এক হাজার ৪০০ শহীদের নাম ও পরিচিতি খোদাই করে প্রস্তাবিত গণমিনারে সংরক্ষণ করা হবে। এটি হবে এমন এক স্মরণ স্থল, যা রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সকল মত ও পথের মানুষের সম্মিলিত গণউদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।
কামার আহমদ সাইমন বলেন, ‘নথিভুক্ত যে এক হাজার ৪০০ এর মতো আমরা যে নাম পাচ্ছি, সে নামগুলোকে অন্তত আমরা যেন ভুলে না যাই, টাকে যেন আমরা স্মারক হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি সেই পরিকল্পনা থেকে আলাপ শুরু হয়।’
পরিবেশবিদ, ইতিহাস গবেষক এবং স্থপতিদের বিভিন্ন গ্রুপ গণমিনারের জন্য এরইমধ্যে কাজ করছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন জমি বরাদ্দ, অর্থ ও প্রকৌশল সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।