২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বরিশাল সিটির মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। পরে, মেয়র হন তারই চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। দায়িত্ব পালন করেন ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট পর্যন্ত। সাদিক আব্দুল্লার বাবা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহও ছিলেন বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য। ১৯৯৬ থেকে ২০০০ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ হিসেবে। অভিযোগ আছে, দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন শেখ পরিবারের এই সদস্যরা। আর এ নিয়েই তদন্ত শুরু করেছে দুদক।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, ‘তাদের কোনো অবৈধ সম্পদ আছে কি না, এখানে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, কোনো জায়গায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে কি না; এ বিষয়ে যদি কোনো তথ্য থাকে, সেগুলো আমাদের কাজের। একইসঙ্গে সিটি করপোরেশনের ভেতর তাদের কোনো সম্পত্তি আছে কি না, বাড়িঘর, দোকানপাঠ এসব আছে কি না, এ তথ্যগুলো আমরা চেয়েছি।’
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসককে দেয়া চিঠিতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকার পরিমাণ, ছাড়কৃত টাকার পরিমাণ, বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, প্রকল্প পরিচালক এবং তদারককারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে দুদক। একইসঙ্গে বুধবার ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সশরীরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে দুদকে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসান উদ্দিন রোমেল বলেন, ‘চিঠির ভাষা বিভিন্ন জনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম আছে। কারো নথিপত্র, কারো যোগদান বা কাগজপত্র চেয়েছে আবার কারো হয়তো ব্যক্তিগত সম্পত্তির কাগজপত্র চেয়েছে।’
দুদকের চিঠিতে ২০২২ সালে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার ব্যানার তৈরির জন্য ১৩ লাখ টাকা খরচ, সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লার ফেসবুক পেজের বুস্টিংয়ের জন্য ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা এবং তার বাসায় ল্যাপটপ, ড্রোন, ক্যামেরা, মনিটরসহ বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয়ে ৫০ লাখ টাকা খরচের কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। তবে, দুদকের চাওয়া তথ্য এখনও পুরোপুরি সরবরাহ করতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, ‘পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই করে আমরা তথ্য যোগার করার চেষ্টা করেছি। যতটুকু সংগ্রহ হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দিচ্ছি। বাকিগুলো খুব তাড়াতাড়ি সংগ্রহ করে পাঠাবো।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের বাজেট ঘোষণা করেছিলো সাদিক আব্দুল্লাহ। সেই বাজেটের পরিমাণ ছিলো প্রায় ৪৪২ কোটি ৮ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই বাজেটের পরিমাণ ছিলো ৪১৮ কোটি টাকা। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট দেয়া হয়েছিল ৪৫০ কোটি টাকা।