আজ (শুক্রবার, ২ মে) নানা আয়োজনে এবি পার্টির ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়। এতে যোগ দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতারা তুলে ধরেন জাতীয় নির্বাচন, সংস্কার ও রাখাইনে করিডরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো।
এতে অংশ নিয়ে নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সংস্কার এবং নির্বাচনের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত দেয়ার দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, ‘নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি। নির্বাচনের বিষয়ে দ্বিমত থাকলে জনগণের রায় নিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’
পাশাপাশি মানবিক করিডোর দেয়ার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেয়ার দাবিও জানান তারা।
জোনায়েদ সাকি বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকার মৌলিক প্রশ্নে কনসেনসাসের ওপর দাঁড়াবে, সেটাই আমাদের আকাঙ্ক্ষা এবং সেই জায়গা যেন তারা সবক্ষেত্রে মেইনটেইন করে, সেটা জাতীয় স্বার্থ হোক বা এই ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে মানবিক করিডোর দেয়ার মত সিদ্ধান্ত হোক।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম বলেন, গণ অভ্যুত্থানে পতনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার নৈতিক ভিত্তি হারিয়েছে। বিচার, সংস্কার, নির্বাচন এই তিনের সমন্বয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে কাজ করতে হবে।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলটা এই সময়ে অতি দ্রুত করা উচিৎ। বিচার চলাকালীন সাংগঠনিক রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে এবং বিচারের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ত আমরা পাবো।’
এবি পার্টির সভাপতি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য তৈরির রাজনীতি ও কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে কাজ করতে চায় তাদের দল।’
এবি পার্টির সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘আমরা যদি এই সুন্দর একটা সংস্কার, বিচার এবং দেশের একটা সার্বিক সুন্দর পরিস্থিতির পর আমরা নির্বাচনে যেতে পারি, তাহলে ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ একটা নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে এবং সেটা আমাদের জন্য একটা সুন্দর সফলতা বয়ে আনবে।’
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে পলাতক স্বৈরাচার পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে।’
তারা দুর্নীতি ও অবৈধ অর্থ নিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়াও সম্প্রতি সুকৌশলে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের দাবিকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, ‘অত্যন্ত সুকৌশলে দেশে এমন একটি আবহ তৈরির অপচেষ্টা চলছে, যেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি করাটাই যেন একটি অপরাধ। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে অবজ্ঞাসূচক বক্তব্য-মন্তব্য কিন্তু পলাতক সৈরাচারকেই আনন্দ দেয়। চলমান সংস্কার যদি রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে অবজ্ঞা করতে হয়, প্রলুব্ধ করে, তাহলে সংস্কারের তাৎপর্যটা কী?’
এর আগে সকালে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি আয়োজন করে এবি পার্টির নেতাকর্মীরা।