জামায়াত আমিরের সঙ্গে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

জামায়াত আমিরের সঙ্গে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
রাজনীতি
0

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের অ্যাম্বাসেডর ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদানের এক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (রোববার, ৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে জামায়াত আমিরের বসুন্ধরার কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনের অ্যাম্বাসেডর শুরুতেই জামায়াত আমিরের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন এবং তার পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।

মতবিনিময় সভায় জামায়াত আমির ফিলিস্তিনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মতো ফিলিস্তিনের সঙ্গে আমাদের আন্তরিক সম্পর্ক বিদ্যমান এবং এ সম্পর্ক চিরদিন অটুট থাকবে ইনশাআল্লাহ। অতীতে বহু বার ফিলিস্তিনের মজলুম মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি বোমা বর্ষণে নারী-শিশুসহ প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি শহিদ হয়েছেন এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।’

টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গাজার ২ হাজার ৭০০ পরিবারের কেউ বেঁচে নেই; সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইসরাইলি বোমাবর্ষণে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে। ধ্বংস হয়েছে ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানবতার দুশমন ইসরাইল গাজায় খাবার প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। শিশুসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা যাচ্ছে।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘সম্প্রতি ইসরাইল প্রকাশ্যে গাজা দখলের ঘোষণা দিয়েছে এবং সেই লক্ষ্যে গাজা থেকে জোরপূর্বক প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করার ভয়াবহ পরিকল্পনা করেছে। গাজা দখলের এ নীলনকশা ইসরাইলি আগ্রাসনের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ, যা আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও ন্যায়নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী।’

ইসরাইলের এ হিংস্র দখলদারিত্ব শুধু ফিলিস্তিনের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবতার জন্য গুরুতর হুমকি বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গাজা সিটি দখল ও ফিলিস্তিনি জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার এ ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে দখলদার ইসরাইলকে বাধ্য করার জন্য আমি জাতিসঙ্ঘ, ওআইসি-সহ শান্তিকামী বিশ্বের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দল-মত-নির্বিশেষে সব মানুষের সমর্থন রয়েছে। ফিলিস্তিনের জন্য আমাদের দোয়া, ভালোবাসা, সহযোগিতা, সমর্থন রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা চাই ফিলিস্তিন একটি জাতি রাষ্ট্র হিসেবে পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে বিশ্বের বুকে দাঁড়াক। কারণ এই জায়গাটা হচ্ছে অসংখ্য নবী-পয়গাম্বরদের স্মৃতি-বিজড়িত স্থান। মুসলমানদের প্রথম কিবলা বায়তুল মুকাদ্দাস এই মাটিতেই রয়েছে। 

এসময় ফিলিস্তিনের বঞ্চিত, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতাও প্রকাশ করেন তিনি। সেইসঙ্গে ফিলিস্তিনে নিহতদের জন্য এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতার জন্য দোয়াও করেন তিনি।

ফিলিস্তিনের অ্যাম্বাসেডর রামাদান বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ায় আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। ফিলিস্তিন বিশেষ করে গাজা উপত্যকার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের অর্থবহ ভালবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আমি ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে আমি ফিলিস্তিনের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আশা প্রকাশ করছি যে, ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশ বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অর্থবহ সমর্থন, সাহায্য, সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জামায়াত আমিরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।

এসএইচ