দেশে প্রচলিত বেশিরভাগ ওষুধ সংরক্ষণে নির্ধারিত তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু বর্তমানে সিলেটের তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি ওঠানামা করায় তাপদাহে ওষুধের শেলফ লাইফ ও কার্যকারিতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
সিলেটের ড্রাগিস্ট ও কেমিষ্ট সমিতি জানায়, জেলায় ৫ হাজার ২০০ ফার্মেসি রয়েছে। এর মধ্যে মডেল ফার্মেসির সংখ্যা মাত্র ১৩টি। এগুলো ছাড়া বেশিরভাগ ফার্মেসিতেই নেই সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা। ফলে, এসব ফার্মেসির ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ভোক্তারা।
স্থানীয়রা জানান, কিছু কিছু ফ্রিজিং আইটেম আছে, এগুলো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় না রাখলে নষ্ট হয়ে যায়। এ ওষুধ যদি কোনো রোগীকে প্রয়োগ করা হয় এটা তো কোনো কাজে দেবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, ওষুধের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এসব ওষুধে রোগমুক্তির পরিবর্তে উল্টো রোগীর ক্ষতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের। এমনকি স্বাস্থ্যখাতের ওপর পড়তে পারে এর নেতিবাচক প্রভাব।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আসাদুজ্জামান রাকিব বলেন, ‘ড্রাগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ইনসুলিন, ভ্যাকসিন ও কিছু চোখের ড্রপ আছে আমাদের এগুলো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হবে। তা না হলে আমরা যে উপকারে দিচ্ছি তা তো হবেই না; বরং আমাদের অনেক অসুখ তৈরি করতে পারে।’
যদিও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলছে, ফার্মেসিগুলোতে ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিতে তদারকি বাড়ানো হয়েছে।
ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক মো. শামীম হোসেন বলেন, ‘আমরা মোবাইল কোর্ট করি, এ ছাড়া আমরা নিজেরাও অভিযান পরিচালনা করি। সেক্ষেত্রে আমরা দেখি ওষুধের গুণগত মান, নিরাপত্তা, কার্যকারিতা এবং যৌক্তিক ব্যবহার। ওষুধের ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিই ও পরামর্শ দিয়ে থাকি।’
দেশে প্রচলিত সব ধরনের ওষুধ মধ্যে বায়োলজিক্যাল বা ভ্যাকসিন জাতীয় ওষুধ ৪ থেকে ৮ ডিগ্রি , অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ ১২ থেকে ২০ ডিগ্রি ও অন্যান্য ওষুধ সংরক্ষণের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ব্যতিক্রম হলেই ওষুধের গুণগত মান কমে যায় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।