একইসাথে নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (আইইউজিআইপি) অধীনে রাঙামাটি পৌরসভার মহাপরিকল্পনা প্রকল্প জরিপ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। পরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি।
রাঙামাটি পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ মোবারক হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি চেম্বারের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোখতার আহমেদ, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক, জেলা যুবদলের সভাপতি আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম প্রমুখ।
এর আগে পৌর মার্কেটের সামনে থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে আলোচনা সভা মঞ্চে এসে যোগ দেয়। মেলায় করদাতাদের জন্য তাৎক্ষণিক করের হালনাগাদ তথ্য, পরিশোধের জন্য ব্যাংকের বুথ স্থাপন এবং কর পরিশোধে ১৫ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া মেলা উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতাল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করেছে।
সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে রাঙামাটি পৌরসভার ১৫ কোটি টাকার বেশি কর বকেয়া রয়েছে। এরমধ্যে চলতি অর্থবছরের জুন পর্যন্ত প্রায় ৮ কোটি টাকা বকেয়া কর। আর দীর্ঘদিন ধরে অনাদায়ী আরো ৭ কোটি বকেয়া আছে। যার মধ্যে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরেই প্রায় ৪ কোটি টাকা বকেয়া অনাদায়ী। তবে এই মেলায় অন্তত ৩ কোটি টাকা বকেয়া কর আদায় হবে প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষের।
তবে পৌর কর নির্ধারণের প্রক্রিয়া নিয়ে নাগরিক সমাজ অসন্তোষ জানিয়েছেন। তারা পৌর কর পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন।
রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘পৌরবাসীকে আহ্বান জানাবো নিয়মিত পৌর কর পরিশোধ করুন। মাসে লাখ লাখ টাকা ভবন দোকান ভাড়া দিয়ে আয় করছেন কিন্তু কর পরিশোধ করছেন না। এই কর খেলাপিদের নামের তালিকা করে একমাসের সময় দিয়ে দেওয়ালে টানিয়ে দেন, তাহলে তারা পরিশোধ করতে বাধ্য হবে।’
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো প্রশাসন সাজাতে চাই। আমরা চাই প্রতিটা কাজ হবে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে, ন্যায়ের ভিত্তিতে সর্বোপরি বৈষম্যহীনভাবে। আমাদেরকে সহযোগিতা করুন। আমরা যতদিন আছি আমাদের নেতৃত্বে আমরা যেভাবে চাই সেভাবে চলবেন। পরে যখন জনপ্রতিনিধি আসবেন তারা তাদের প্রয়োজন অনুসারে রাষ্ট্রের নিয়ম অনুসারে, স্থানীয় সরকারের বিধিবিধান অনুসারে প্রশাসন সাজাবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন দিয়েছেন। মুগ্ধের কথা বলি, আবু সাঈদের কথা বলি, আবার চট্টগ্রামের ওয়াসিমের কথা বলি। প্রথম শহীদ। তার শাহাদাতের বিষয়টি পড়বেন। যখন অ্যাসেসমেন্ট করার জন্য, নিবন্ধন কোন কাজের অভিযোগ আসে তখন ইউটিউবে আমাদের মুগ্ধের শহীদ হওয়ার মুহূর্তটি দেখবেন। আমার ধারণা, আপনার বিবেক আপনাকে বাধা দিবে।’
রাঙামাটি পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, ‘এই পৌরসভার অনেক টাকা বকেয়া এবং পৌর কর দিতে মানুষের মাঝে একটা অনীহা। অনেক সময় তাদের অভিযোগের তীর আমাদের ওপরেও আসে। এই চিন্তা থেকেই মানুষকে মেলার মাধ্যমে জানাতে চাই আপনারা আসেন, পৌর কর দেন। এবং আমাদের কাছ থেকে যে প্রত্যাশা নাগরিক সেবা, সেটা আমরা নিশ্চিত করবো।’