টঙ্গীতে ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ২৫

বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে আহতরা
এখন জনপদে
2

গাজীপুরের টঙ্গীতে ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় আহত হয়েছে অন্তত ২৫ জন। আজ (বুধবার, ১৮ জুন) দুপুরে নগরীর ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী মাজার বস্তি এলাকায় পিমকি অ্যাপারেলস লিমিটেডের সামনে এঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন আনিস (৪২), আবু সাইদ (৩৮), সোহেল (৩৪),ফাহিম (২১), ইয়াসিন (২০), আসাদ (২০), ইয়াসিন (১৮), হানিফ (২৫), শুভ (১৯), রানা (১৮), সজিব (২০), উজ্জ্বল রাজ (৩৭), আল-আমিন (৩৫), হাসান (২৪), সবুজ (২৮), লিটন (৩৬), ফেরদৌস (২৫), আলমগীর (৩৫), কাউসার (২৮)।

আহত বাকিদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে গুরুতর আহত আনিস, আবু সাইদ ও সোহেলকে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।

জানা যায়, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ওই কারখানার বর্জিত মালামাল নিচ্ছিলেন নিহাল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম কিরন। গত ১৭ জুন উক্ত কারখানার সাথে বর্জিত মালামাল ক্রয় বিক্রয়ের নতুন চুক্তি করেন ওমর ফারুক নামের জনৈক ব্যবসায়ী।

তিনি টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ সুমনের ঘনিষ্ঠ। নতুন চুক্তিপত্র অনুযায়ী ১৮ জুন বুধবার মালামাল আনতে যান ওমর ফারুকের লোকজন। এসময় বিএনপি নেতা কিরনের অনুসারী শাহাবুদ্দিন দাবাড়ু নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন বর্জিত মালামাল কারখানা থেকে বের করতে বাঁধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫জন আহত হয়। এদের মধ্যে ১৯জনকে উদ্ধার করে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ সুমন বলেন, 'ব্যবসায়ী ওমর ফারুক কারখানাটির সাথে চুক্তিপত্র অনুযায়ী মালামাল নিতে গেলে রাশেদুল ইসলাম কিরনের অনুসারী সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত মাদক কারবারি শাহাবুদ্দিন দাবাড়ু দলবল নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এসময় সঙ্গে থাকা নগদ টাকাও লুটে নেয় তারা।'

তবে টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম কিরন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'চুক্তিপত্র অনুযায়ী ওই কারখানায় ঝুট মালামালের ব্যবসা করে আসছিলাম আমি। বুধবার হঠাৎ ওই কারখানা থেকে সুমন সরকারের লোকজন মালামাল আনতে গেলে আমার লোকজন বাধা দেয়। চুক্তিপত্রের সকল শর্ত মেনেই আমি ব্যবসা করে আসছি। নতুন করে অন্য কোন পক্ষের সাথে চুক্তি সম্পাদন হয়েছে কিনা আমি জানি না, আমাকে কারখানা কর্তৃপক্ষও জানায়নি।'

এদিকে, পিমকি অ্যাপারেলস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মাকসুূুদুর রহমান বলেন, '৫ আগস্টের পর রাশেদুল ইসলাম কিরন চুক্তি করে ঝুটে নিতেন। গতকাল (১৭ জুন) সুমন সরকারের রেফারেন্সে জনৈক ওমর ফারুক নামে একজনের নামে নতুন করে চুক্তি সম্পাদন হয়। আজ ওমর ফারুকের লোকজন ঝুট নিতে আসলে কিরণের পক্ষের লোকজন বাঁধা দেয়। উভয়পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হওয়ায় আমরা কাউকেই মালামাল দেইনি।'

টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, 'যার নামে চুক্তিনামা আছে সে ব্যবসা করবে। ঝুট নিয়ে ঝামেলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

সেজু