নৌ, স্থল আর রেলপথের সুবিধা সম্বলিত নওয়াপাড়া নৌ-বন্দর। ১৯৯০ সালে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপড়ায় ভৈরব নদকে কেন্দ্র করে শুরু হয় নৌ-বন্দরের কার্যক্রম।
ত্রিমাত্রিক যোগাযোগ সুবিধা থাকায় দ্রুত আমদানি নির্ভর বাণিজ্য বাড়তে থাকে। বিশেষ করে সার, কয়লা, চাল, গমসহ কমপক্ষে ৭ ধরণের পণ্যের বৃহত্তর মোকামে পরিণত হয় এ নৌ-বন্দর।
তবে এলসি জটিলতা, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনসহ নানা কারণে বেশ কিছুদিন ধরে দেশের অন্যতম ব্যস্ত নৌ-বন্দরটির ব্যবসা-বাণিজ্য দেখা দিয়েছে মন্দাভাব।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এই কার্গো এবং আমদানি করা পণ্য কমার কারণ মূলত এলসি সংকট, ডলার সংকট। কার্গো কম আসায় আমাদের শ্রমিকরা বসে থাকছে।’
আরেকজন বলেন, ‘নদীর নাব্যতা একটা সমস্যা। সেই সঙ্গে এলসি জটিলতা তো আছেই। এ সবকিছু মিলিয়ে নওয়াপাড়ার ব্যবসা আসলে ভালো যাচ্ছে না।’
এ ছাড়া, যে নদকে ঘিরে চলে বিপুল কর্মযজ্ঞ, সেই ভৈরব নদ নাব্যতা হারিয়ে মৃতপ্রায়। এতে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হওয়ার প্রভাব পড়ছে পণ্য আনা-নেয়ায়। আগে দৈনিক গড়ে ২০ থেকে ২৫টি কার্গো জাহাজযোগে মালামাল আসত, এখন তা নেমেছে অর্ধেকে।
যশোর নওয়াপাড়া নৌ-বন্দরের উপ-পরিচালক মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘বিগত অর্থবছরে আমরা যেখানে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছি, এ বছরে সেই আয় কিছুটা কমার আশঙ্কা করছি। যদি ব্যাংকিং এবং অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, তাহলে আবার এ বন্দরের কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে বলে আশা করছি।’
এদিকে কার্গো-জাহাজের সংখ্যা কমে আসায় বন্দরে কর্মরত ২০ থেকে ২৫ হাজার শ্রমিক চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই হয়ে পড়েছেন কর্মহীন।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘অচিরেই এই নদী খনন করা হলে আমরা এবং আশপাশের ব্যবসায়ী যারা আছেন তারা উপকৃত হত।’ বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ বন্দরে বছরে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি জাহাজ পণ্য আনা-নেয়া করে।