আজ (রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকেই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কর্মসূচী শুরু করেছেন বিক্ষোভকারীরা। সকাল ১০টায় পুখুরিয়াসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয়রা সড়কে গাছের গুড়ি, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এছাড়া সকাল ৯টায় রাজবাড়ী-ফরিদপুর-ঢাকা রেলপথের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদি রেল ক্রসিংয়ে নকশীকাঁথা ট্রেন আটকে দেয় বিক্ষুব্ধরা। এ সময় যাত্রীদেরও নামিয়ে দেয়ার অভিযোগ করেন একাধিক যাত্রী।
ঢাকায় মেয়ের বাসায় পেঁয়াজ নিয়ে ট্রেনে যাচ্ছিলেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রসুলপুর গ্রামের বাচ্চু মাতুব্বর (৫২) নামে একজন ব্যক্তি।
পুখুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা যায়, মাথায় পেঁয়াজের বস্তা নিয়ে হেটে আসছেন। তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাস না পেয়ে ট্রেনে করে ঢাকায় মেয়ের বাসায় যাচ্ছিলাম। হামিরদি রেলক্রসিং যাওয়ার পর রাস্তার ওপর দেখি আগুন জ্বলছে, অনেক মানুষ ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তখন ট্রেন থেকে আমাদের নামিয়ে দিয়েছে।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভাঙ্গা রেলস্টেশন কর্মকর্তা সাকিবুর রহমান বলেন, ‘রাজবাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিলো নকশিকাঁথা। ট্রেনটি আটকে দেয়ায় ভাঙ্গা জংশনে ঢাকা থেকে আসা রাজবাড়ীগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস বন্ধ হয়ে আছে।’
এছাড়া খুলনার ট্রেনটি (জাহানাবাদ এক্সপ্রেস) অবরোধ করার আগেই ঢাকায় পৌঁছে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
এর আগে গতকাল শনিবার বিকালে উপজেলার আলগী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনদিনের সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ডাক দেন আলগী ইউপি চেয়ারম্যান ম. ম. সিদ্দিক মিয়া। এরপরে রাতেই তাকে নিজ বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে। তিনি এ আন্দোলনের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন জানান, রাতে ডিবি পুলিশ আটক করে ফরিদপুরে নিয়ে গিয়েছে। থানায় এখনও হস্তান্তর করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত ৪৬টি সংসদীয় আসনে পরিবর্তন এনে গেজেট প্রকাশ করেন। গেজেট অনুযায়ী ফরিদপুর-৪ এর অন্তর্গত ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) সংসদীয় আসনের সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে।
এরপরেই ইউনিয়ন দুটি ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে ক্ষোভে ফুসে উঠে পরেরদিন শুক্রবার দুটি মহাসড়কসহ (ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল) এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ শুরু করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন এবং তিনদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধরা। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনদিন সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ করা হয়। এতে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষ। এরপর শুক্র-শনিবার স্থগিত করে তৃতীয় দফায় তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, মানুষের যাতে ভোগান্তি না হয় এবং যান চলাচলে স্বাভাবিককরনে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আমরা বিক্ষুব্ধদের সাথে কথা বলে যাচ্ছি।