খেলাপি ঋণে অচল ইউনিয়ন ব্যাংক; একীভূতকরণে আপত্তি নেই পরিচালনা পর্ষদের

ইউনিয়ন ব্যাংক
ব্যাংকপাড়া
অর্থনীতি
0

এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউনিয়ন ব্যাংকের মোট বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৯৮ শতাংশই খেলাপি। নামে-বেনামে ঋণ দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর হদিসও মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে শরিয়াভিত্তিক দুর্বল পাঁচ ব্যাংককে একীভূতকরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মু. ফরীদ উদ্দিন আহমদ জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউনিয়ন ব্যাংককে নিয়ে করা পর্যালোচনার সঙ্গে একমত তারা।

বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা খেলাপি ঋণে ডুবতে বসা ব্যাংকগুলোর একটি ইউনিয়ন ব্যাংক। ব্যাংকটির মোট বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৯৮ শতাংশই খেলাপি। বর্তমান অবস্থা এতটাই নাজুক যে, আমানত রক্ষা এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা ছাড়া চলতে পারছে না ব্যাংকটি।

অভ্যন্তরীণ তদন্তে উঠে এসেছে, ১১৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রায় ৬ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ইচ্ছাকৃতভাবে ফেরত দিচ্ছে না। বিভিন্ন শাখায় ছড়িয়ে থাকা এ খেলাপিদের তালিকা আরও বড়। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, জামানত নেয়া জমির মূল্য ২ হাজার ৭০০ শতাংশ বেশি দেখিয়ে ২০টি শাখার ১০১ জন গ্রাহককে ঋণ দেয়াসহ নানা অনিয়মে জড়িয়েছে ব্যাংকটি।

আরও পড়ুন:

শরিয়াভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ের ধাপ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডাকা শুনানিতে অংশ নিয়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান জানান, এসব ঋণের পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব, ভুয়া কাগজপত্র এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছিলো।

ইউনিয়ন ব্যাংক চেয়ারম্যান মু. ফরীদ উদ্দীন আহমদ বলেন, ‘যাদের নামে এ বিনিয়োগগুলো ঋণগুলো লেখা আছে তাদের খুঁজেই পাওয়া যায় না। এস আলমের গ্রুপের এখন যে প্রিন্সিপাল প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।’

ব্যাংকটির ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর জানান, গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নিতে প্রস্তুত তারা।

ইউনিয়ন ব্যাংক ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর মো. হুমায়ন কবির বলেন, ‘হয়তো একটু অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে আমানতকারীদের আমানত ফেরত দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করছি।’

এর আগে, মঙ্গলবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শুনানিতে অংশ নিয়ে একীভূত হতে মত দেয়। যদিও চলতি সপ্তাহের শুরুতে একীভূত না হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সময় চায় এক্সিম এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। সম্মিলিতভাবে এ পাঁচ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা।

এফএস