তবে কেবল ম্যালেরিয়া নয়, একইসঙ্গে আছে ডেঙ্গুর আতঙ্কও। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১২৪ জন। যার মধ্যে ১২০ জন স্থানীয় আর ২ হাজার ৪ জন রোহিঙ্গা। এরমধ্যে শুধু গত ২৯ মে থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ১৫ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৫৬৪ জন। এরমধ্যে ৫২৫ জনই রোহিঙ্গা। আর গতবছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৪৫৪ জন যার মধ্যে মৃত্যু হয় ৭ জনের।
প্রতিদিন পর্যটকে মুখর থাকে কক্সবাজার। আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাস করছে ১২ লাখেরও বেশি মানুষ। এই বাস্তবতায় দুই দিক থেকেই চেপে ধরেছে প্রাণঘাতী মশাবাহিত রোগ। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে উদ্বেগজনক হারে, কেড়ে নিচ্ছে প্রাণও।
শুধু চলতি জুন মাসেই কক্সবাজার জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪০ জন। এর মধ্যে ৮৯ জন বাংলাদেশি ও ৫১ জন রোহিঙ্গা। এরমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন রোহিঙ্গা। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর চাপ। অনেকেই বুঝতে পারছেন না তাদের জ্বর ডেঙ্গু নাকি ম্যালেরিয়া।
অনেকেই জানান, অনেকদিন ধরে শরীর খারাপ, জ্বর, বমি ভাব নিয়ে হাসপাতালে আসার পর রক্ত পরীক্ষা করে জানতে পারেন তাদের ম্যালেরিয়া হয়েছে।
চাপ সামলাতে বাড়ানো হচ্ছে হাসপাতালের সেবা। তবে, সাধারণ মানুষের সচেতনতা জরুরি বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। আর স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, আক্রান্তদের অনেকেই কাজের প্রয়োজনে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও আশপাশের পার্বত্য এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই ম্যালেরিয়া রোগের শিকার হয়ে ফিরেছেন তারা। তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত কক্সবাজারে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন ২১৫ জন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শান্তনু ঘোষ বলেন, ‘কিছুটা পিকে আছে ম্যালেরিয়া। হয়তো আরও বাড়তে পারে। আমাদের সদর হাসপাতালে যথেষ্ট পরিমাণ ম্যালেরিয়া ওষুধ মজুদ আছে। এ সময় যে বৃষ্টি হয়, পাহাড়ের অ্যানোফিলিস মশা সমতলে মুভ করে তখনই ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়।’
কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদুল হক বলেন, ‘এখন ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার সিজন চলছে। জ্বর হওয়ার সাথে সাথে আমরা বাসায় গিয়ে পরীক্ষা করি, রেজাল্ট পজিটিভ হলে ওষুধ দেয়া হয়, খেলে রোগী ভালোও হয়ে যায়। রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে ক্যাম্প থেকে বের হয়, পার্শ্ববর্তী হিল ট্যাক্সে গিয়ে কাজ করে। সেখান থেকে অসুস্থ হলে তখন ২/১ দিন দেরি করে, বাসায় গিয়ে বসে থাকে। যখন অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায় তখন আমাদের এখানে আসে। কিন্তু ততক্ষণে তার অবস্থা মরণাপন্ন হয়ে যায়।’