পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে শুরু হয়েছে তথ্য যুদ্ধ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রতীকী
বিদেশে এখন
0

পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে শুরু হয়েছে তথ্য যুদ্ধ। কে সত্য আর কে মিথ্যা বলছে, তা নিয়ে রীতিমতো বাগযুদ্ধ চলছে। পরস্পরবিরোধী তথ্যের সত্যতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় উঠেছে। যা তথ্যের স্বাধীন যাচাইকে করে তুলেছে আরো কঠিন। এদিকে, দেশবিরোধী প্রচারণা, ভুয়া খবর যাচাইয়ে নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

গেল বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য আসছে বিভিন্ন রকম তথ্য। পাকিস্তান বলছে, হামলায় নিহত হয়েছে ২৬ জন যদিও ভারতের দাবি নিহত শতাধিক। দুই দেশই তাদের নিজেদের পক্ষে ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনা করছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে এক ধরনের তথ্য যুদ্ধ।

ঘটনার পর প্রতিযোগিতামূলক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরস্পরবিরোধী বর্ণনা উঠে আসে। উভয় দেশই নিজেদের পক্ষে জনমত গড়তে মরিয়া। ভারতের হামলায় পাকিস্তানের কাশ্মীরে বিস্ফোরণের ফুটেজগুলো যাচাই করেছে বিবিসি। ভাইরাল হওয়া একটি ক্লিপ মূলত ইসরাইলি হামলায় গাজার ভিডিও। আরেকটি লেবাননের বৈরুতের বিস্ফোরণের দৃশ্য।

ভারতীয় ব্রিগেড সদরদপ্তর উড়িয়ে দেয়ার ফুটেজটিও ভুয়া। যেখানে দেখানো হয়েছে ২০২৫ সালের ভারতীয় বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে পরিচালিত পাকিস্তানের একটি অভিযান। এ ছাড়া, ভারতের পাঁচটি যুদ্ধ বিমান ধ্বংসের ফুটেজগুলো মূলত ২০২৪ ও ২০২১ সালে ভারতের যুদ্ধ বিমান দুর্ঘটনার চিত্র।

এদিকে, রাফাল ও ড্রোনসহ ভারতীয় পাঁচটি বিমান ভূপাতিত করার দাবি করছে পাকিস্তান। যদিও এখন পর্যন্ত তা পুরোপুরি স্বীকার করেনি নয়াদিল্লি। ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, তিনটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।

ভারত বলছে, পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের জবাবে পাকিস্তানে সন্ত্রাসীদের ৯টি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে নয়াদিল্লি। আর ইসলামাবাদের দাবি, পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের ছয়টি শহর ও একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ভারত। ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এবং তাদের হামলা ছিল সুনির্দিষ্ট। যদিও স্থানীয়রা বলছে স্কুল ও মসজিদের হামলা করেছে ভারত।

পাকিস্তানের সরকারি এক্স অ্যাকাউন্টে বলা হয়, নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনারা সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণ করেছে। তবে ভারত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি। নয়াদিল্লির আত্মসমর্পণের পেছনে সুনির্দিষ্ট কারণও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় ভিন্ন দাবি ও পাল্টা অভিযোগ নতুন কিছু নয়। ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় ভারতের ৪০ নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়। ঘটনার দায় পাকিস্তানের ঘাড়ে চাপালেও তা অস্বীকার করে ইসলামাবাদ। আর ভারতের বিমান হামলাটি হয়েছিল জনমানবহীন জায়গায়।

একইভাবে ২০১৬ সালে উরিতে ১৮ জন ভারতীয় সেনা নিহতের পর পাকিস্তান সীমান্তে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায় ভারত। পাকিস্তান এ ঘটনাকে অবাস্তব কল্পনা বলে উড়িয়ে দেয়। তাদের দাবি ওই সময় সীমান্তে শুধু গুলিবর্ষণ হয়েছে।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশবিরোধী প্রচারণার প্রতিরোধে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভুল ও অপতথ্য দমনে প্রতিটি রাজ্য সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সেজু