বিশ্বের শান্তির পায়রা হয়ে উড়ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পকে যুদ্ধবাজ মনে হলেও এবার হাঁটছেন শান্তির পথে। পাক-ভারত যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার পর এবার হামাস-ইসরাইল ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বেশ তৎপর দেখা যাচ্ছে তাকে।
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর এটি ট্রাম্পের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। আর ট্রাম্পের এ সফরকে নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক সফর বলছেন অনেকে।
তিনদিনের এ সফরের শুরুতে সৌদি আরবে যাবেন ট্রাম্প। সৌদি বাদশাহ মুহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে গাজা যুদ্ববিরতিসহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সৌদি বাদশাহ মোহাম্মদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে প্রত্যাশা ট্রাম্পের। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের বিনিয়োগ ছিল ৬০০ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া ইসরাইলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করতেও আলোচনা করবেন তারা।
সৌদি আরবের পর কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমিরের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করার কথা রয়েছে তার। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো জোড়ালো করতে চান ট্রাম্প ও তার পরিবার। যুক্তরাষ্ট্রে সংযুক্ত আরব আমিরাত ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। এ ছাড়া কাতারও বিপুল অঙ্ক বিনিয়োগ করার কথা রয়েছে।
তবে ট্রাম্পের এবারের মধ্যপ্রাচ্য সফরের তালিকায় নেই ইসরাইলের নাম। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে গেল কয়েকদিন ধরেই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ দিয়ে আসছেন ট্রাম্প। তার কথা না শুনায় তাই নেহানিয়াহুর ওপর কিছুটা নাখোশ তিনি। মূলত এ কারণেই তার সফরে জায়গা পায়নি ইসরাইল।
এ ছাড়াও ইয়েমেন মার্কিন বিমান হামলার বিষয়টিও ইসরাইলকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি ওয়াশিংটন। ইসরাইলের প্রতি ট্রাম্পের এমন আচরণকে বেশ উদ্বেগজনক মনে করছেন ইসরাইলি কূটনীতিকরা।
যদিও ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরকালে গাজায় অভিযান স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে কাতারে মধ্যস্থতাকারী পাঠাবে তেল আবিব।
গাজা যুদ্ধ বন্ধ ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও উঠে পড়ে লেগেছেন ট্রাম্প। তুরস্কের আঙ্কারায় দেশটির প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এরদোয়ানের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে বৃহস্পতিবার রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসছেন। তাদের এ বৈঠকেও যোগ দিতে পারেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার বৃহস্পতিবারের বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে যোগ দেয়ার ইচ্ছে রয়েছে। এ বৈঠক থেকে ইতিবাচক কোন খবর আসতে পারে। রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধ বন্ধ করতে চাই।’
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর ঘিরে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আশার আলো দেখছেন গাজার লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।