গত শুক্রবার থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে ট্রাম্প প্রশাসন। এর প্রতিবাদে রাজপথে নামেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী।
বিক্ষোভকারীদের দমাতে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের মোতায়েন,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে আরো উস্কে দিয়েছে বলে মত ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউসামের। এতে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। স্থানীয় সরকারে অনুমতি ছাড়া দাঙ্গা দমনে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনকে গণতন্ত্র হত্যার শামিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। অবশ্য ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের এ মন্তব্যের জবাব দিয়েছে হোয়াইট হাউস।
দাঙ্গা পরিস্থিতিতে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে শুরু হয়েছে লুটতরাজ। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটের অভিযোগ উঠেছে শহরটিতে। এ পরিস্থিতিতে লস অ্যাঞ্জেলেসে আংশিক কারফিউ জারি করেছেন শহরটির মেয়র কারেন বাস। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়ে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত চলবে কারফিউ। যা আগামী কয়েকদিন বহাল থাকবে বলে জানান তিনি।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস বলেন, ‘লুটপাট বন্ধে লস অ্যাঞ্জেলেসের বেশ কিছু জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে কারফিউ জারি করছি। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দাঙ্গা-হাঙ্গামার কারণে। অনেক সম্পদ নষ্ট হচ্ছে।’
এরইমধ্যে শহরটিতে মোয়ায়েন রয়েছে ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ও ৭০০ মেরিন সেনা। বিতর্ক থাকা স্বত্বেও জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে এই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ফেডারেল আইনের অধীনে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সদস্যদের পাঠিয়েছি। যদি তাদের সেখানে না পাঠাতাম তবে লস অ্যাঞ্জেলেসে আগুন জ্বলতো। কোন ভাবেই দাঙ্গার হাত থেকে এ শহরকে রক্ষা করা যেতো না।’
বিক্ষোভকারীদের দমাতে রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, ফ্ল্যাশ ব্যাং গ্রেনেড, মরিচের গুঁড়া ও লাঠিচার্জ করছে পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ড সদস্যরা। এরইমধ্যে গত ৪ দিনে প্রায় ৪ শ’ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যরা। যাদের মধ্যে মঙ্গলবারই আটক করা হয় প্রায় ২ শ’ জনকে। এমন ধরপাকড়ে ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘খুবই হতাশ। গায়ের রং, ভাষা, ইউনিফর্ম ও পরিচয়পত্র যাই থাকুক আমরা সবাই ভাই-বোন।’
আরেকজন বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন করে কর্মস্থল, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধরপাকড় চালাচ্ছে আইস। যা খুবই হতাশার। কোথাও নিরাপদ নই।’
লস অ্যাঞ্জেলেস ছাড়াও নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, টেক্সাস, ওয়াশিংটন ডিসি ও শিকাগোসহ বড় বড় শহরগুলোতেও ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ।