পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বনিবনা না হওয়ায় হঠাৎ করেই তেহরানের ওপর চটেছে ইসরাইল। বিমান হামলা দিয়ে শুরু করে একের পর এক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তারা। জবাবে ইরানও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ইসরাইলকে।
ইসরাইল-ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলায় আর কোন দেশ জড়িয়ে পড়তে পারে? আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতিতে কী ধরণের প্রভাব পড়তে যাচ্ছে দুই পরাশক্তির সংঘাতের জেরে? এসব নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।
যেখানে বলা হয়েছে, ইরান-ইসরাইল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে ইরানের প্রক্সি যোদ্ধা হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইরাকের মিলিশিয়া গোষ্ঠী। সেই আতঙ্কে এরইমধ্যে এ অঞ্চল থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়েছে ওয়াশিংটন। এছাড়াও, ইরানকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো উপায়ে পাশে পেতে চায় ইসরাইল। কারণ, কেবলমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই রয়েছে বাঙ্কার ধ্বংসের বোমা। যা দিয়ে ইরানের ফোর্ডো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস করা যাবে।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের পাশাপাশি পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গেও সংঘাতে জড়াতে পারে ইরান। শত্রুপক্ষের দোসর সৌদি আরবের ওপর বহুদিন ধরেই ক্ষোভ রয়েছে ইরানের। এছাড়া ইসরাইলকে আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয়ায় জর্ডানকেও লাল তালিকায় রেখেছে তেহরান।
ইসরাইল তাদের এবারের হামলায় ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা করলেও ইউরেনিয়াম ধ্বংস করতে পারেনি। ধারণা করা হচ্ছে, মাটির কয়েক ফুট গভীরে নিউক্লিয়ার বোমা সংরক্ষণ করে রেখেছে ইরান। বিবিসি বলছে, তেল আবিব যদি তেহরানের পারমাণবিক বোমা ধ্বংস করতে না পারে তবে সামনের দিনগুলোতে এর চড়া মাশুল গুণতে হবে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও এর মিত্রদের। যেখানে পারমাণবিক যুদ্ধও অসম্ভব কিছু নয়।
ইরান-ইসরাইলের চরম উত্তেজনাকর এ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও বেশ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এরইমধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে তেলের দাম। এ পরিস্থিতিতে ইরান যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তবে তেল সরবরাহে সংকট দেখা দিতে পারে। এছাড়াও লোহিত সাগরে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধারাও পশ্চিমাদের বাণিজ্যিক জাহাজে ফের হামলা শুরু করতে পারে। যা নি:সন্দেহে অস্থির করে তুলবে বিশ্বকে।