থাই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল ব্যাংকক

থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ
বিদেশে এখন
0

থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল রাজধানী ব্যাংকক। প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধকে ঘিরে থাই প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপ ফাঁসের পর শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, ২০২৩ সালে ফিউ থাই পার্টি ক্ষমতায় আসার পর এটিই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। আশঙ্কা আছে, গণআন্দোলনের জেরে ভেঙে যেতে পারে অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে চাপে থাকা পেতংতার্নের জোট সরকার।

রাতারাতি বদলে গেছে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের ভিক্টরি মনুমেন্টের চেহারা। ভারী বৃষ্টিতেও প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। 

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, সরকার পতনের হাওয়া বইছে কখনোই ইউরোপীয় বা বিদেশি নিয়ন্ত্রণে না থাকা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে।

থাই নাগরিকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘অতীতে আমি ও আমার পরিবার ফিউ থাই দলের সমর্থক ছিলাম। বাবা-মা-ভাইবোন সবাই তাদের পক্ষে ছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যা করলেন, এই সম্পর্ক আর রাখতে চাই না।’

আরেকজন বলেন, ‘সবচেয়ে অগ্রহণযোগ্য বিষয় হচ্ছে সীমান্ত বিরোধ। প্রধানমন্ত্রী কীভাবে কম্বোডিয়ার সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানকে বলেন থাই সেনা কমান্ডার আমাদের পক্ষে নেই?’

ঘটনার সূত্রপাত গেল মে মাসে। এসময় বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে সংঘাতে জড়ায় থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী। এর একপর্যায়ে থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সিনেটের প্রেসিডেন্ট হুন সেনের ফোনালাপ ফাঁস হয়। 

এসময় এক থাই সেনা কর্মকর্তার সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দীর্ঘদিন দেশের রাজনীতিতে প্রভাব খাটানো থাই সেনাবাহিনীকে নিয়ে সমালোচনার জেরে জনগণের বিরাগভাজন হয়ে ওঠেন ৩৮ বছর বয়সী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি, ২০২৩ সালে ফিউ থাই পার্টি ক্ষমতায় আসার পর এটিই দেশে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। 

একদিকে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ অন্যদিকে জোট সরকারের মধ্যে ঐক্যের অভাব। এতে আগামী জুলাইয়ে অনাস্থা ভোটের মুখেও পড়তে হতে পারে প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে।

তবে যার সঙ্গে ফোনালাপের জেরে বিপদে পড়েছেন থাই প্রধানমন্ত্রী, কম্বোডিয়ার সিনেট প্রেসিডেন্ট হুন সেনের দাবি, শান্তিপূর্ণভাবে বিতর্কিত সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির সদিচ্ছা আছে নমপেনের।

কম্বোডিয়ার সিনেট প্রেসিডেন্ট হুন সেন বলেন, ‘গেল ২৮ মে কম্বোডিয়ার মম বেই এলাকায় সেনাবাহিনীর ওপর থাই সেনারা যে অবৈধ অভিযান ও হামলা চালায় তা দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার গুরুতর লঙ্ঘন । একে আমি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি বলতে চাই । তবে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছি।’

রয়টার্স বলছে, শনিবার (২৮ জুন) যারা রাজপথে নেমেছেন তাদের অনেকেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রার পতনের আন্দোলনের সঙ্গেও সরাসরি জড়িত ছিলেন। যেই অভ্যুত্থানের জেরে ২০১৬ সালে থাকসিন ক্ষমতাচ্যুত হন। 

এমননি ইংলাক সিনাওয়াত্রা, যিনি পেতংতার্নের ফুফু, ২০১৪ সালে আদালতের রায়ের ভিত্তিতে তাকে যখন ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, সেই আন্দোলনে জড়িতদেরও অনেকেই আবারও নেমেছেন রাজপথে।

এসএইচ