জেরুজালেম থেকে এএফপি জানায়, শনিবার (২৮ জুন) ইসরাইলের চ্যানেল টুয়েলভ এর সাথে এক সাক্ষাৎকার দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনেট। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহু ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন যা অনেক বেশি সময়।’
এ সময় বেনেট বলেন, ‘ইসরাইলি সমাজে যে বিভাজন তৈরি হয়েছে, তার জন্য নেতানিয়াহুর ওপর বড় ধরনের দায় বর্তায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘নেতানিয়াহুর শক্তিশালী সমর্থক রয়েছে ঠিকই, তবে একইসঙ্গে রয়েছে তীব্র বিরোধিতাও। গাজা যুদ্ধ শুরুর পর, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে তার নেতৃত্ব নিয়ে যেভাবে প্রশ্ন উঠেছে, তাতে অনেকেই তার পদত্যাগ দাবি করছেন।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ডানপন্থি নেতা বেনেট বলেন, ‘নেতানিয়াহুকে অবশ্যই যেতে হবে।’
২০২১ সালে বেনেট নেতানিয়াহুবিরোধী বিভিন্ন দলের সঙ্গে জোট গড়ে ক্ষমতায় আসেন। এর মধ্য দিয়ে তখন নেতানিয়াহুর টানা ১২ বছরের শাসনের অবসান হয়। তবে বেনেট বর্তমান বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদের সঙ্গে যে জোট সরকার গড়েছিলেন, তা প্রায় এক বছরেই ভেঙে পড়ে। এরপর আগাম নির্বাচন হয়, আর কট্টর ডানপন্থী ও ইহুদি দলগুলোর সমর্থনে নেতানিয়াহু আবারও প্রধানমন্ত্রী হন।
রাজনীতি থেকে কিছুটা বিরতি নেওয়া বেনেটের ফিরে আসার গুঞ্জন এখন জোরালো হয়ে উঠেছে। জনমত জরিপ বলছে, তিনি চাইলে আবারও নেতানিয়াহুকে পরাজিত করার মতো সমর্থন পেতে পারেন।
আগাম নির্বাচনের ধারা থাকলেও, ২০২৬ সালের শেষভাগের আগে কোনো নির্বাচন হওয়ার পরিকল্পনা নেই। যদিও ইসরাইলে আগাম নির্বাচন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
সাক্ষাৎকারে বেনেট দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনার ওপর যে হামলা হয়েছে, সে পরিকল্পনার ভিত্তিটা তিনিই তৈরি করে দিয়েছেন।
ইরানের বিরুদ্ধে এ হামলার সিদ্ধান্তটি খুবই ভালো হয়েছে এবং তা দরকার ছিল দাবি করে বেনেট জানান, তাঁর নেতৃত্বাধীন স্বল্পস্থায়ী সরকার আগে থেকেই প্রস্তুতি না নিয়ে রাখলে এ হামলা সম্ভব হতো না।
সাক্ষাৎকারে গাজা প্রসঙ্গেও কথা বলেন বেনেট। তাঁর মতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ ক্ষেত্রে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে। তবে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনার অবস্থা বিপর্যয়কর।
নেতানিয়াহু সরকারের ‘সিদ্ধান্তহীনতার’ সমালোচনা করেন বেনেট। তিনি মনে করেন, গাজায় হামাসের কাছে যাঁরা এখনো জিম্মি আছেন, তাঁদের মুক্ত করতে অবিলম্বে ‘সমন্বিত’ চুক্তি করা প্রয়োজন।
নেতানিয়াহুকে ইঙ্গিত করে বেনেট বলেন, ‘হামাসকে নির্মূল করার দায়িত্ব ভবিষ্যতের কোনো সরকারের ওপর ছেড়ে দিন।’