গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি হামলা, আরো ১১০ জনের প্রাণহানি

গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি হামলা ও প্রাণহানি
বিদেশে এখন
0

গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত হামলায় শনিবার (১২ জুলাই) প্রাণ গেছে আরও ১১০ ফিলিস্তিনির। এর মধ্যে, রাফাহর দক্ষিণাঞ্চলে ত্রাণ নেয়ার সময় নিহত হয়েছে অন্তত ৩৪ জন। যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ ফিলিস্তিনপন্থি একটি সংগঠনের সমর্থনে বিক্ষোভ করায় ৪১ জনকে আটক করেছে লন্ডন পুলিশ। এছাড়া ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে স্টারমার প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির অন্তত ৬০ জন সংসদ সদস্য। এদিকে, গেলও শনিবারও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানী তেল আবিবে।

প্রথমে ত্রাণ আটকে দিয়ে ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার। আর তারপর কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা আর সতর্কতা ছাড়া ত্রাণ কেন্দ্রে সহায়তা নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা।

গেলো ৬ সপ্তাহ ধরে এমনই এক অভিযান অব্যাহত রেখেছে নেতানিয়াহু বাহিনী। গেলো মে থেকে এখনও পর্যন্ত ত্রাণ নিতে এসে প্রাণ গেছে ৮০০ এর বেশি ফিলিস্তিনির।

ফিলিস্তিনি ত্রাণ প্রার্থীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমরা ত্রাণের অপেক্ষায় বসে ছিলাম। হঠাৎ আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়। ৫ মিনিট ধরে গুলি চলছিল। অন্য কোথাও সরে যাওয়ার কোনো উপায় ছিল না।’

ইসরাইলের এ অভিযান নিয়ে শুক্রবার (১১ জুলাই) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা, যেখানে বলা হচ্ছে এখনও পর্যন্ত যেসব ত্রাণ কেন্দ্রে হামলা হয়েছে তার অধিকাংশের তত্ত্বাবধানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মদদপুষ্ট সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন বা জিএইচএফ।

সবশেষ, শনিবার রাফার যে ত্রাণ শিবিরে হামলা হয়েছে সেটিও নিয়ন্ত্রণ করছিল এই জিএইচএফ। বিতর্কিত এই সংস্থাটির গতিবিধি নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন তুলছে আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কর্মকর্তারা।

এছাড়া অধিকৃত পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় নিহত মার্কিন-ফিলিস্তিনি নাগরিকের হত্যার বিচারের দাবি তুলছেন তার পরিবারের সদস্যরা। হত্যার কারণ অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চান তারা।

এদিকে যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ ফিলিস্তিনপন্থি একটি সংগঠনের পক্ষে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত দেশটির পার্লামেন্টের বাইরে। এসময় নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটকে করেছে লন্ডন পুলিশ। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো ফিলিস্তিনপন্থি এ সংগঠনের সমর্থনে লন্ডনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হল।

এছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের শিকার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দিতে ক্ষমতাসীন স্টারমার প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য লেবার পার্টির অন্তত ৬০ জন সংসদ সদস্য।

স্থানীয় রাজনীতিতে মধ্য ও বামপন্থী ব্যাকবেঞ্চার নেতা হিসেবে আলোচিত-সমালোচিত এই সংসদ সদস্যরা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, গাজায় যা চলছে তা একটি নির্মূল করে দেয়ার চক্রান্ত।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে চাপে রেখে কিংবা জাতিগত চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করেও সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দমাতে পারছেন না ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমরা সরকারকে চাপে রাখতে চাই। যারা জিম্মি অবস্থায় আছে তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে এসেছি।’

দুর্নীতির মামলায় জর্জরিত এই নেতার প্রতি আস্থা হারিয়েছেন খোদ জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা। তাদের অভিযোগ, গাজায় অভিযানের তীব্রতা বাড়িয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করলেও যুদ্ধ বন্ধ বা জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি নেতানিয়াহু।

এসএইচ