দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না এমন অভিযোগ তুলে ঢালাওভাবে বাণিজ্য অংশীদার রাষ্ট্রগুলোর ওপর শুল্কের বোঝা চাপিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এতে মার্কিন নাগরিকদের স্বার্থ কতোখানি রক্ষা হচ্ছে- এমন প্রশ্ন তুলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
জুনে যুক্তরাষ্ট্রে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে শূণ্য দশমিক তিন শতাংশ হারে। সিনএনএন বলছে, এমনটা অব্যাহত থাকলে মার্কিন মুলুকে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়াবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত কনজিউমার প্রাইজ ইনডেস্ক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় মূল্যস্ফীতির এই হার সর্বোচ্চ। সিএনএন বলছে, গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়া ও আমদানিকৃত পণ্য কিনতে চড়া শুল্ক আরোপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত খেলনার ৮০ শতাংশই আসে চীন থেকে। বেইজিং-এর সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে এই খেলনার দাম বেড়েছে অপ্রত্যাশিত হারে। এছাড়াও গেল মে'র তুলনায় জুনে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত পোশাকের দাম বেড়েছে শূণ্য দশমিক ৪ শতাংশ। ১ দশমিক ৯ বেড়েছে যন্ত্রপাতির দাম। ২০২৪ এর জানুয়ারির তুলনায় কম্পিউটার, স্মার্ট হোম অ্যাসিস্ট্যান্ট জাতীয় পণ্য, খেলাধুলার সরঞ্জামের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়াও ভিডিও প্রযোজনায় ব্যবহৃত পণ্যের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত।
এদিকে, অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির এই ঊর্ধ্বগতি আর ফেডারেল রিজার্ভের জন্য সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার ১ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে বারবার চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প। বিশ্লেষকরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না এনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিলে মার্কিন অর্থনীতি চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে।
অর্থনীতিবিদ ব্রায়ান জ্যাকবসন বলেন, ‘আমি আশা করি ফেড রিজার্ভ ট্রাম্পের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে। চলতি বছরের শেষে সুদের হার কমানো শুরু করা যেতে পারে কিন্তু সুদের হার ১ শতাংশে নামানো হবে কী না তা বলতে পারছি না। প্রেসিডেন্ট চাপ দিলেও ফেড রিজার্ভের উচিত তা প্রতিহত করা।’
এ সুদের হার কমানো নিয়ে মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও বিভাজন তৈরি হয়েছে। কয়েকজন নীতিনির্ধারক চলতি মাসেই সুদের হার কমানোর বিষয়ে মত দিলেও মূল্যস্ফীতি ও ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে এই সম্ভাবনা ক্ষীণ। এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে, ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারণী সভায়। যা অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জুলাই।