বৃষ্টির পানিতে ভেজা লন্ডনের জনপদ দিয়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের এভাবেই টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তবুও গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার মানুষগুলোর মনে এতটুকুও ভয়ের বীজ বুনতে পারেনি যুক্তরাজ্য পুলিশ। আটক হওয়া ফিলিস্তিনপন্থি এই নারীর হাস্যোজ্জ্বল মুখ তারই বার্তা দেয়।
শনিবার একদিনেই লন্ডন পুলিশের হাতে ধরপাকড়ের শিকার অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারী। এরপরও যুক্তরাজ্য জুড়ে তীব্র হচ্ছে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভ। চলতি মাসে দেশটিতে ফিলিস্তিনপন্থি-প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপ নামক সংগঠনকে সন্ত্রাসবাদ আইনের অধীনে নিষিদ্ধ করার পর আরও বেশি প্রতিবাদী হয়ে ওঠেছেন তারা।
প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপকে সমর্থনে রাস্তায় নেমে আটকের পর সর্বোচ্চ ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও, তার তোয়াক্কা করছেন না বিক্ষোভকারীরা। ধরপাকড়কে উপেক্ষাতো করছেনই, বৃষ্টিতে ভিজেও ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে ও গায়ে জড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। একজন আন্দোলনকারী বলেন, যেখানে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, সেখানে বৈরি আবহাওয়া তাদের কাছে তুচ্ছ বিষয়।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আজকের এই বৃষ্টি আমাদের কাছে কোনও বিষয়ই না। গাজার সবখানে নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে। শিশুদেরও ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি করা হচ্ছে।’
লন্ডনের এই বিক্ষোভ থেকে গাজায় দ্রুত ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে জোরালো দাবি তুলে ধরেছেন আন্দোলনকারীরা। এমনকি গণহত্যার দায়ে নেতানিয়াহুকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
নেতানিয়াহুর সাথে সরাসরি আলোচনা করার সম্ভাবনা কম। আমার মনে হয় তিনি দখলদারিত্বের প্রতি খুবই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কর্তৃক তাকে অপরাধী ঘোষণা করা উচিত, কারণ তিনি যুদ্ধাপরাধ করছেন অথবা দেশকে তা করতে প্রভাবিত করছেন। আমার মনে হয় তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত।
এদিন ফিলিস্তিনিপন্থিদের আটক করা হলেও পাশেই লন্ডন পুলিশের পাহাড়ায় জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা গেছে অনেক ইসরাইলপন্থিদের।
যুদ্ধবিরতির কোনো আভাস না মেলায়, লন্ডন ছাড়াও শনিবার ইসরাইলি ভূখণ্ডেও জিম্মি মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করেছেন স্বজনরা। এর জন্য দ্রুত যুদ্ধবিরতি নিশ্চিতে ইসরাইলে থাকা মার্কিন দূতাবাস ও নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে জোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা।