বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ সদস্য দিদারুলের মৃত্যুতে ট্রাম্পের সমবেদনা

যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ সদস্য দিদারুলের মৃত্যুতে ট্রাম্পের সমবেদনা
বিদেশে এখন
0

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনে বন্দুকধারীর গুলিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ সদস্য দিদারুল ইসলামের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে নিউ ইয়র্কের বাঙালি কমিউনিটিতে। এ ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউ ইয়র্ক পুলিশসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছেন তাকে। ৩৬ বছর বয়সী দিদারুল মাত্র সাড়ে ৩ বছর আগে নিউ ইয়র্কের পুলিশ বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন।

গেলো সোমবার (২৮ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের পার্ক অ্যাভিনিউয়ের একটি উঁচু ভবনে বন্দুকধারী হুট করেই এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া শুরু করেন। গুলিতে প্রাণ হারান ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের সদস্য দিদারুল ইসলামসহ আরও ৪ জন। হামলাকারী পরে নিজেও আত্মহত্যা করেন।

নিউ ইয়র্ক ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার এলাকায় একটি বাড়িতে পরিবার ও বাবা–মায়ের সঙ্গে থাকতেন নিহত দিদারুল ইসলাম। দুই সন্তানের বাবা দিদারুলের স্ত্রী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ২০০৯ সালে সিলেটের মৌলভীবাজার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। মাত্র সাড়ে ৩ বছর আগে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ বা এনওয়াইপিডিতে অফিসার পদে যোগ দেন ৩৬ বছর বয়সী দিদারুল।

তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে নিউ ইয়র্কের বাঙালি পাড়ায়। ছেলের মৃত্যুসংবাদ শুনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি দিদারুলের বাবা মুহাম্মদ আব্দুর রব। ব্রঙ্কসের শান্ত এলাকায় মানুষের আনাগোনা থামেনি সারারাত। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধু ও প্রবাসীরা তরুণ এ পুলিশ কর্মকর্তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।

গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে ঘটনার নিন্দা জানান তিনি। নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস দিদারুলকে নিউ ইয়র্কের শহরের গর্ব বলে অভিহিত করেন।

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, ‘নিহত পুলিশ সদস্য দিদারুল নিউ ইয়র্কের বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন। তিনি তার দায়ত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে নেওওয়াইপিডি।’

নিউ ইয়র্কে বাঙালি কমিউনিটিতে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন নিহত পুলিশ সদস্য দিদারুল। প্রতিবেশীরা জানান, কাজের প্রতি খুবই দায়িত্বশীল ছিলেন তিনি। মানুষ হিসেবে ছিলেন অসাধারণ।

প্রতিবেশীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘দিদারুলের মৃত্যুর খবর শুনে খুবই খারাপ লাগছে। তার সন্তান আছে, পরিবার আছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি প্রাণ দিয়েছেন।’

আরকেজন বলেন, ‘আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে না চিনলেও, জানতাম বাঙালি একজন পুলিশ বিভাগে কর্মরত আছেন। তিনি আমাদের কমিউনিটির গর্ব ছিলেন। তার মৃত্যুর সংবাদ মেনে নেয়ার মতো না।’

নিউ ইয়র্ক সিটির পুলিশ বিভাগে কর্মরত আছেন হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি। শত শত পুলিশ সদস্যদের অংশগ্রহণে শোক র‍্যালির মাধ্যমে ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার মসজিদে আনা হয় দিদারুল ইসলামের মরদেহ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্ক পুলিশ কমিশনারসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। দিদারুলের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন নিউ ইয়র্কের কংগ্রেস সদস্যরাও।

এসএইচ