ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে ‘স্বার্থ না থাকায়’ হস্তক্ষেপে বিরত যুক্তরাষ্ট্র: জেডি ভ্যান্স

সজিব হোসেন
ভারত, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকার ছবির সংযুক্তি
এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে ‘স্বার্থ না থাকায়’ যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপে বিরত বলে জানিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। সামরিক সংঘাত যুদ্ধে রূপ নেয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান। অন্যদিকে, দু’পক্ষকেই ধৈর্য ধারণের আহ্বান ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। এদিকে, পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণের পর সীমান্তের দুই প্রান্ত এখন থমথমে।

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। মিত্র জোট গড়ার চেষ্টা করছে দুই পক্ষই। যদিও চলমান উত্তেজনায় কোনো পক্ষ নেয়ায় আগ্রহী নয় যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের দাবি, নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ করবে না ওয়াশিংটন। কারণ এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্বার্থ নেই। ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স জানান, কূটনীতির মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসনে উৎসাহিত করবে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘আমরা যা করতে পারি, তা হলো উত্তেজনা প্রশমনে উৎসাহিত করা। তবে আমরা এই যুদ্ধের মাঝপথে জড়াবো না। কারণ এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ নেই। পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করাও যুক্তরাষ্ট্রের সামর্থের বাইরে।’

বর্তমান পরিস্থিতিতে দু’পক্ষকেই ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অন্যদিকে, সামরিক সংঘাত পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধে রূপ নেয়ার শঙ্কা রিসেপ তাইপ এরদোয়ানের।

এসময় পেহেলগামে হামলার ঘটনা তদন্তে আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্য পাকিস্তানের প্রস্তাবকে সমর্থন দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। সাম্প্রতিক ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান সংঘাত যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। সাম্প্রতিক মিসাইল হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক। পাকিস্তানে যারা শহীদ হয়েছেন, সবার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, ‘আমাদের আশা, এই অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়ানো বন্ধে কাজ করবে ভারত ও পাকিস্তান। আমাদের এই অঞ্চলে শান্তি, বিশেষ করে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জরুরি। আশা করছি, শিগগিরই এটি বাস্তবায়িত হবে।’

লাইন অফ কন্ট্রোল ঘিরে কয়েকদিন ধরে পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোয় বিরাজ করছে থমথমে পরিবেশ।

পাকিস্তানের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা পরিবার ও গবাদি পশুসহ আশ্রয় নিয়েছেন নিরাপদ স্থানে। তবে নারী ও শিশু শূন্য হলেও বসতভিটা না ছাড়ার সংকল্প পাকিস্তানি পুরুষদের।

খুবই অল্প সময়ের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হয়েছে। তাই অনেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিতে পারেননি।

একজন বলেন, ‘সব পুরুষ আছি। কিন্তু নারী ও শিশুদের অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যুদ্ধ শুরু হলে ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবো।’

এদিকে, পাকিস্তানের করাচিতে সেনাবাহিনীর সমর্থনে র‍্যালিতে অংশ নিয়েছেন হাজারো মানুষ। এসময় বেশিরভাগ মানুষের হাতে ছিলো জাতীয় পতাকা। পাশাপাশি বহন করা প্ল্যাকার্ডে ভারতকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের তকমা দেয়া হয়।

অন্যদিকে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরও অনেকটাই থমথমে। পাকিস্তানের হামলার প্রমাণ খুঁজে বের করছেন ভারতীয়রা। রাস্তায় গুটিকয়েক লোক দেখা গেলেও বেশিরভাগ মানুষকেই নিরাপত্তা তল্লাশির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সাধারণ মানুষদের মধ্যে একজন বলেন, ‘গাড়ি নষ্ট হয়েছে, মানুষের বাড়ি, দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন।’

আরেকজন বলেন, ‘ভয় নেই। উত্তেজনা ছড়ানো যাবে না। আমাদের ডিফেন্স সিস্টেম ও সেনারা সতর্ক অবস্থানে আছে।’

রাজনীতির বলির পাঠা হতে চান না দুই প্রান্তের উপত্যকাবাসী। তাই অস্ত্রের পরিবর্তে কূটনীতির মাধ্যমে দ্বন্দ্ব নিরসনের আহ্বান ভূস্বর্গের বাসিন্দাদের।

এসএইচ