পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপের আগেই ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা রাশিয়ার

ভলোদিমির জেলেনস্কি, ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভ্লাদিমির পুতিন
ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

ট্রাম্পের ফোনালাপের প্রস্তাবের পর ইউক্রেনে ড্রোন হামলার মাত্রা আরো বাড়িয়েছে রাশিয়া। গতকাল (রোববার, ১৮ মে) একযোগে প্রায় তিনশ’ ড্রোনের হামলা চালানো হয়। এর মধ্যেই পশ্চিমাদের ভয় দেখাতে মস্কো আন্তঃমহাদেশিয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করেছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনীয় গোয়েন্দাদের। এমন উত্তেজনার মধ্যেও ট্রাম্প-পুতিনের আজকের ফোনালাপ ফলপ্রসূ হবে বলে প্রত্যাশা ওয়াশিংটনের। এদিকে মস্কোকে চাপে রাখতে রাশিয়ার ছায়া নৌবহরে কড়া নজর রাখছে এস্তোনিয়া ও ফিনল্যান্ড।

পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপের আগে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালালো রাশিয়া। ট্রাম্পের ফোনালাপের প্রস্তাবের পর স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৮টা নাগাদ রুশ সেনারা ২৭৩টি ড্রোন ছোঁড়ে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের।

এদিন একযোগে লক্ষ্যবস্তু করা হয় কিয়েভ, দোনেৎস্কসহ আরো বেশ কয়েকটি অঞ্চল। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বহু ঘরবাড়ি। হতাহতের শিকার হন বেশ কয়েকজন। হামলার হাত থেকে বেঁচে ফেরার ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন প্রাণে রক্ষা পাওয়া ইউক্রেনীয়রা।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘ড্রোন দেখতে পেয়ে বাড়ির পেছনে মাটির নিচে থাকা আমাদের একটি গুদামে পরিবারের সবাই আশ্রয় নিয়েছিলাম। পরে ড্রোনটি বাড়িতে আঘাত হানে। মাটির নিচে গুদামে থাকায় বেঁচে যাই।’

অন্য একজন বলেন, ‘অনেক বিস্ফোরণ হয়েছে। যুদ্ধের চতুর্থ বছর চলছে, তবু যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই। সৃষ্টিকর্তা আমাদের রক্ষা করুন।’

এর মধ্যেই পশ্চিমাদের ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা হিসেবে রাশিয়া আন্তঃমহাদেশিয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করেছে বলে গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। যদিও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত মস্কোর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এমন উত্তেজনার মধ্যে পুরো বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের দিকে। এরমধ্যেই গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আশা প্রকাশ করেন, ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের মধ্য দিয়ে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে সক্ষম হবে ইউক্রেন এবং রাশিয়া। ট্রাম্প ছাড়া এ যুদ্ধ থামানোর শক্তি আর কারও নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে হবে। এটাই প্রেসিডেন্টের শেষ চিন্তা। আমরা সবাই এ বিষয়ে একমত। প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিত্বের একটি শক্তি রয়েছে যা অতুলনীয়। প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যদি তিনি তা করতে না পারেন, তাহলে আশা করি কেউই তা পারবেন না।’

এদিকে ক্রেমলিনকে চাপে রাখতে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাল্টিক সাগর দিয়ে রাশিয়ার ছায়া নৌবহরের উপর কড়া নজর রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তাদের পাশাপাশি সজাগ দৃষ্টি রাখছে ফিনল্যান্ডও।

এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টেন মিহাল বলেন, ‘যদি ট্রাম্প পুতিনের সাথে কথা বলেন, আমি আশা করি তিনি এই ধারা অব্যাহত রাখবেন। এতে বোঝা যাচ্ছে চাপ বাড়ছে। যার কারণে পুতিনের পদক্ষেপ নেয়া উচিত এবং নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া উচিত। তারপর প্রয়োজনে আলোচনা করতে পারে।’

মার্কিন সময় সোমবার সকাল ১০টার দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ফোনালাপের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথেও ফোনে কথা বলবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এসএস